ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সংবাদ প্রকাশের পর হলের দখল ছাড়লো জবি ছাত্রদল

সংবাদ প্রকাশের পর হলের দখল ছাড়লো জবি ছাত্রদল

সংবাদ প্রকাশের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম আবাসিক হলের দখল ছেড়েছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটায় শাখা ছাত্রদল কর্মী ও বাংলা বিভাগের ১৮ ব্যাচের আশরাফুল এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৭ ব্যাচের মাহমুদুল হাসান নাঈম এসে কক্ষের তালা খুলে তাদের রাখা জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

এর আগে গত শুক্রবার ‘শিক্ষার্থীদের বের করে জবির হল দখল করে কক্ষে তালা দিল ছাত্রদল’ শিরোনামে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদে বলা হয়, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে শাখা ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে টিপু সুলতান রোডের শহীদ নজরুল ইসলাম হলের ১০৪ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের বের করে কক্ষ দখল করে তালা দেয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বাকি কক্ষগুলোও দখলে নেয়া হবে বলে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হলে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। এরপর হলটিতে অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে হলটি বসবাসযোগ্য করে তুলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুম থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এ সময় শাখা ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুর রহমান দুর্জয়, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাশফিকুর রাইন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান, ১১ ব্যাচের শামীম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৭ ব্যাচের মাহমুদুল হাসান নাইম, বাংলা বিভাগের ১৮ ব্যাচের আশরাফুল, ১৭ ব্যাচের ফাইনান্স বিভাগের সৈকত মাহমুদসহ পনেরো-বিশ জন নেতাকর্মী হল দখল করেন।

পরে ১০৪ নম্বর কক্ষটি দখলে নিয়ে তালা দেন তারা। বাকি কক্ষগুলোও ছাত্রদল দখল করবে বলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন তারা। হলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ঠাঁই নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে জিনিসপত্রসহ বের করে দেন। ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী বলেন, তারা এত বেশি এগ্রেসিভ ছিল ঠান্ডা মাথায় কথা বলার পরিবেশ ছিল না।

আমি সিনিয়র হলেও তারা জুনিয়র নিয়ে আমার সঙ্গে নানা খারাপ ব্যবহার করে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বই খাতা বাইরে ফেলে দেয়, টেবিল, চকি বাইরে বের করে দেয়। পরে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে এসে তালা খুলে দেয়। তাদের রাখা জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রায়হান হোসেন অপু বলেন, রুম ফাঁকা ছিল, ওখানে কেই ছিল না। এ জন্য কয়েকজনকে তুলে দিয়েছি। রুম থেকে কাউকে বের করে দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাকি সব অভিযোগ মিথ্যা। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই। মাত্র ফেসবুকে এমন একটা পোস্ট দেখলাম। তবে শুনেছি ওখানে একজন ছাত্রদলের পরিচয় দিয়ে হলটা কন্ট্রোল করে। এখন যদি আসলেই ছাত্রদলের কেউ এমনটা করে থাকে তাহলে আমরা সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত