‘চিকিৎসকদের থেকে সহকারী উপদেষ্টা করার দাবি’

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া চিকিৎসকদের মধ্য থেকে সহকারী স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে কমপক্ষে দুই জনকে নিয়োগ দেয়াসহ ১৭টি দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার লক্ষ্যে’ এনডিএফ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে দাবিগুলো তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।

তাদের উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো : ১. ফ্যাসিবাদের দোসর, যাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে গতিশীলতা নিয়ে আসতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বৈরাচারের দোসরদের দ্রুত সরিয়ে সৎ, দক্ষ, যোগ্য এবং বৈষম্যের শিকার চিকিৎসক কর্মকর্তাদের পদায়ন করে স্বাস্থ্য প্রশাসন ঢেলে সাজাতে হবে। ২. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের যারা চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করেছে, তাদের তালিকা করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

শান্তি সমাবেশে যোগদানকারী ও ফ্যাসিবাদের দোসর সব চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা করে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিতে হবে। ৩. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেয়া, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী যেসব চিকিৎসকদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে সেই বদলি আদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। বৈষম্যের শিকার সব চিকিৎসক ও কর্মচারীকে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। ৫. বিগত সময়ে যত দুর্নীতি হয়েছে তার যথাযথ তদন্তের জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে দায়িত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৬. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবার গুণগতমান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালী করতে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী চিকিৎসকসমাজ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ছাত্র সমন্বয়কদের প্রতিনিধিত্ব রেখে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।

৭. আন্তক্যাডার বৈষম্য দূর করতে স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকদের চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী নিয়মিত পদোন্নতি দিতে হবে। ৮. ভুল ও মানহীন চিকিৎসায় জনগণের শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক ক্ষতি বন্ধ করতে নিবন্ধনবিহীন হাসপাতালগুলোর তালিকা করতে হবে। একই সঙ্গে এই সব প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতি ধর্ম গোত্র রাজনৈতিক পরিচয় সবকিছুর বাইরে গিয়ে একজন চিকিৎসকের প্রধান দায়িত্ব রোগীর চিকিৎসা করা।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনে আহত-নিহতদের তালিকা করা হয়েছে। আমরা প্রায় সব হাসপাতালে আহত রোগীদের খোঁজ রাখার বিষয়টি অব্যাহত রেখেছি; যাতে সবাই সুচিকিৎসা পায়।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের সহ-সভাপতি ডা. মো. আতিয়ার রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. তোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক ডা. মো. শাহাদাত হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক ডা. একে এমজিয়াউল হক।