ঢাকা ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অডিটরদের চাকরি দশম গ্রেডে উন্নীতের দাবি

অডিটরদের চাকরি দশম গ্রেডে উন্নীতের দাবি

কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) কার্যালয়ের আওতাধীন অডিটরদের গ্রেড বৈষম্য দূর করে ১১ থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন অডিটররা। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানান তারা। অডিটরদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে আহমেদুর রহমান ডালিম বলেন, একই পদে দুই ধরনের বেতন থাকাটা কখনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এমন বিষয় কর্তৃপক্ষকেই নৈতিকভাবে ও দায়িত্বশীল হয়ে সমাধান করতে হবে। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা রিট পিটিশনের রায়ে সিএজি ও অধীনস্থ অফিসের পদকে ১১ তম গ্রেড থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার কথা বলা হয়।

পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ শুধু মামলার পক্ষভুক্ত ৬১ জনকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার আদেশ দেয়। এরপর অন্যান্য অডিটররা ধারাবাহিক কনটেম্পট পিটিশন দায়ের করতে থাকেন এবং আদালত সব মামলায় অডিটর পদকে দশম গ্রেডে উন্নীত করার পক্ষে রায় দেন। কিন্তু অর্থ বিভাগের একটি ‘দুষ্ট চক্রের’ কারণে আর কেউ দশম গ্রেডে উন্নীত হতে পারেনি। ডালিম বলেন, গত ১২ আগস্ট অ্যাডিশনাল ডেপুটি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (পার্সনেল) অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য তাগিদ দিয়ে একটি চিঠি দেন। পরের দিন ১৩ আগস্ট অর্থ বিভাগের প্রশাসন ও সমন্বয়ে অনু বিভাগের প্রশাসন-২ অধিশাখা আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে দশম গ্রেডে উন্নীত করা যাবে কি না, সে বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য এক চিঠিতে অনুরোধ জানান। এরপর গত ২০ আগস্ট আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৫ থেকে অর্থ সচিবের কাছে মতামতসহ একটি চিঠি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন। ওই মতামতে সিএজি কার্যালয় ও এর অধীন দফরগুলোর অন্যান্য অডিটর পদের বেতন গ্রেড ১১ থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করা যেতে পারে বলে মতামত দেয়া হয়।

পরে ২৫ আগস্ট অর্থ বিভাগের প্রসাশন ও সমন্বয় অনুবিভাগ থেকে ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের কাছে দেয়া একটি চিঠিতে বলা হয়, কনটেম্প পিটিশনে অন্তর্ভুক্ত অডিটরসহ অডিটর পদকে গ্রেডে-১১ থেকে ১০-এ উন্নীতকরণের প্রস্তাবটির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে পাঠানো হলো। গত ৮ সেপ্টেম্বর কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে সিএজি কার্যালয় ও এর অধীন দফতরগুলোর অডিটর পদের বেতন গ্রেড ১১ থেকে ১০-এ উন্নীত করার জন্য বাস্তবায়ন আদেশ জারি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করে। কিন্তু এতো দিন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও নির্দেশনা জারি হয়নি। ডালিম আরও বলেন, আমরা নিজ অধিকার আদায়ের জন্য স্বেচ্ছায় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে আমাদের অফিস চত্বরে ১ মাস ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু আমাদের এই অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচির মঞ্চ ও প্যান্ডেল গত ১১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে একদল দুষ্কৃতিকারী ভেঙে দেয়।

আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিকে বিতর্কিত করার প্রয়াসে বহুমুখী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দশম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য দেশব্যাপী বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সব অডিটর, সুপার এবং নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অফিসাররা গত ৮ আগস্ট থেকে সেগুনবাগিচার হিসাব ভবন চত্বরে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। এ অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত কর্মসূচি চলমান থাকবে। আন্দোলনকারীরা বর্তমান অর্থ সচিবসহ সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দোসরদের’ পদত্যাগের দাবিও জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিজিএ কার্যালয়ের অডিটর মো. মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, মো. আব্দুল আজিজ, আল আমিন, মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত