ঢেলে সাজানো হচ্ছে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মোজাম্মেল খোকন, ময়মনসিংহ

পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে পুলিশকে সেবামুখী করতে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ঢেলে সাজাতে একযোগে কাজ শুরু করেছেন নবনিযুক্ত ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) মো. আশরাফুর রহমান। এরই মধ্যে এই জনবান্ধব কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসাবে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের ৩২ ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) কে একযোগে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পৌনে ৩টায় ঢাকাপোস্টকে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) ড. মো. আশরাফুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বুধবার বিকালে অতিরিক্ত আইজি (ফিন্যান্স) আবু হাসান মুহম্মদ তারিক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়। আদেশ হওয়া এই ৩২ পুলিশ কর্মকর্তাকে নৌ-পুলিশ, ট্যুরিস্ট, সিআইডি, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, হাইওয়ে ও পিবিআই পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে বদলি করা হয়। ডিআইজি মো. আশরাফুর রহমান বলেন, পুলিশকে জনবান্ধব সেবামুখী করতে বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের স্থলে আগামী সপ্তাহে অন্যদের পদায়ন দেয়া হবে।

সেই সঙ্গে উপ-পরিদর্শকদেরকেও (এসআই) সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারদের অভ্যান্তরিন আদেশে কর্মস্থল পরিবর্তন করে সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে থানা-পুলিশের হৃদ্ধ্যতাপূর্ণ সেতুবন্ধন তৈরি করার চেষ্টা চলছে। ডিআইজি আরো বলেন, দীর্ঘ সময় একই এলাকায় থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন করে কাজে মনোযোগী করার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সেই সঙ্গে তাদেরকে কাজে মনযোগী করতে ট্রেনিং প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষ করে আইনের পদক্ষেপ গুলো পুলিশের কাজে যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কী না তাও নজরদারির আওতায় আনা হবে। মোট কথা পুলিশ হবে আইনের, সেবামুখী এবং জনবান্ধব। কোনো অবস্থানেই পুলিশে দলবাজির সুযোগ দেয়া হবে না। একাধিক সূত্র জানায়, বদলি হওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তারা ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিল। বিগত পতিত সরকারের সময়ে তারা বছরের পর বছর ঘুরেফিরে একই জেলার বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিল। এতে সুবিধাভোগী হিসাবে পরিচিত এই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ। তারা পতিত ক্ষমতাসীনদের নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক সুবিধায় গড়ে তুলেছেন বিপুল বিত্ত-বৈভব।

বদলি হওয়া ওসিদের মধ্যে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাঈন উদ্দিন, মুক্তাগাছার ওসি ফারুক আহম্মেদকে ট্যুরিস্ট, ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মাজেদুর রহমানকে নোয়াখালি ট্রেনিং সেন্টার, ত্রিশালের ওসি কামাল হোসেনকে নৌ-পুলিশ, ভালুকার শাহ কামাল আকন্দকে সিআইডি, খারুল বাশারকে পিবিআই, জাহাঙ্গীর আলমকে হাইওয়ে, আ. মজিদকে সিআইডি, রাশেদুজ্জামানকে নৌ-পুলিশ, তারাকান্দার ওয়াজেদ আলীকে সিআইডি, হালুয়াঘাটের মাহাবুবুল হককে পিবিআই, ধোবাউড়ার চান মিয়াকে সিআইডি, নেত্রকোনার তাজুল ইসলামকে পিবিআই, রাশেদুল ইসলামকে সিআইডি, রফিকুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেনকে পিবিআই, এটিএম মাহমুদুল হককে হাইওয়ে, খোকন কুমার সাহাকে পিবিআই, মিজানুর রহমানকে সিআইডি, তাওহিদুর রহমানকে পিবিআই, ব্জামালপুরের মোহাব্বত কবীরকে ও রাজু আহম্মদকে পিবিআই, মুশফিকুর রহমান, বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ও সুমন তালুকদারকে সিআইডি, নূর মোহাম্মদকে পিবিআই, আব্দুল আহাদ খানকে সিআইডি এবং শেরপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে হাইওয়ে, নকলা থানার ওসি আব্দুল কাদের মিয়াকে সিআইডি, ঝিনাইগাতী থানার ওসি বশির আহামেদ বাদলকে সিআইডি, শ্রীবরদী থানার ওসি কাইয়ুম খান সিদ্দিকীকে সিআইডি ও নালিতাবাড়ী থানার ওসি মো. মনিরুল আলম ভূঁইয়াকে সিআইডি পুলিশে বদলি করা হয়েছে।