জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের দায় কম হলেও ভোগান্তি বেশি

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের দায় কম হলেও ভোগান্তি অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। গতকাল রোববার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে ইউএন উইমেনের অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) ‘অ্যানুয়াল কমিউনিটি অব প্র্যাকটিস (কপ) নেটওয়ার্ক কনভেনশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে তিনি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেছেন।

মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নারী সম্প্রদায়ের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নিজেদেরই কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় অধিক মাত্রায় কার্বন নিঃসরণকারী দেশের ওপরই। এসব সমস্যা সমাধানে আমাদের তৎপরতা বাড়াতে হবে।

এ সময় ইউএন উইমেন-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং বলেন, বাংলাদেশ অনেক আগেই দেখিয়ে দিয়েছে যে, তৃণমূলের নারী নেতৃত্বের মাধ্যমেই রূপান্তরশীল অভিযোজন হতে পারে। আজকের এই অনুষ্ঠানই তার প্রমাণ। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নারী নেত্রীরা একত্রিত হয়েছেন। তারা উপদেষ্টার সামনে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধানগুলো তুলে ধরছেন। নিঃসন্দেহে এটি চমৎকার একটি বিষয়।

অন্যদিকে, প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি মায়েদের ভুগতে হয়। রাষ্ট্রীয় দলিলগুলোর একদম শেষে জেন্ডার নিয়ে একটা চ্যাপ্টার থাকে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ও দুর্দশা মোকাবিলা করতে হয় মায়েদের অর্থাৎ নারীদের। তিনি আরো বলেন, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ডে টাকা দেয়া উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ঐতিহাসিক দায়। কিন্তু তারা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে পরিমাণ টাকা দেয়ার কথা তা দিচ্ছে না। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলোকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং জাতীয় পর্যায়ের মানুষকে এগুলো সমাধানের কথা ভাবতে অনেক বছর ধরে শেখানো হয়নি। আমরা সঠিক সময়ে ছোট ছোট উদ্যোগ নেই না, পরে বড় সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম হই না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমজেএফ’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা তৃণমূল পর্যায়ের একসঙ্গে এতজন নারী নেত্রীকে পেয়েছি, এটা যেমন আনন্দের, তেমনই প্রধান অতিথি হিসেবে একজন জলবায়ু পরিবর্তনের যোদ্ধা, নারী অ্যাকটিভিস্টকে পাওয়াও অত্যন্ত আনন্দের। আমি সবসময় বিশ্বাস করি, আমাদের দেশের নারীরাই পারবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সামাজিক সমস্যাগুলো নিরসন করতে। এই আয়োজনে নারী নেতৃত্বাধীন ৯৭টি সংগঠন নিয়ে ‘উইমেন্স ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে পাঁচজন নারী উদ্যোক্তাকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর ভূমিকা পদক, ২০২৪’ তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা। পদকপ্রাপ্তরা হলেন- কুড়িগ্রামের রোশনা খাতুন, কক্সবাজারের রওশন আক্তার, জামালপুরের সুরতি বেগম, রাহিমা খাতুন ও শেফালি খাতুন।