নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। সেখানে একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
এ সময় বক্তারা বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ২৯ বছর। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। অথচ জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের পরে সিভাসুতে সব বৈষম্য ও অপশক্তি দূর করে প্রতিষ্ঠানকে যখন ঢেলে সাজানো হচ্ছে, তখন সেই প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্য উঠেপরে লেগেছে একটি চক্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতি ও অগ্রাযাত্রায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন উপাচার্য। তার সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত, নেতৃত্ব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সব বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা সম্পর্কে কেবল অভ্যন্তরীণ একজন শিক্ষকের পক্ষেই জানা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে একজন উপাচার্যের পক্ষে ভূমিকা রাখা তখনই সম্ভব, যখন তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তরে ধারণ করবেন।
অন্যথায় বাইরে থেকে কেউ এলে তিনি রুটিন কার্যক্রম চালাবেন, অতঃপর চলে যাবেন। ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের শিক্ষার্থী মো. শাহারিয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, গত ৬ অক্টোবর আমরা প্রেস ব্রিফিং করে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়েছি, যার ২৪ ঘণ্টা শেষ। আমাদের যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত দাবি যদি মেনে নেয়া না হয়, তাহলে রোড ব্লক, পেট হাসপাতালকে শাট ডাউনের আওতায় আনার মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
এরই মধ্যে সব অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন শাটডাউনের আওতায় রয়েছে। মোর্শেদ জানান, অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের মধ্য থেকে যোগ্য একজনকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
এই এক দফা দাবি শুধু এখনকার জন্য নয়, সিভাসুর ক্ষেত্রে আজীবন বহাল থাকবে। প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীরা গত ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ, ৩ অক্টোবর ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট ও অবস্থান কর্মসূচি, ৪ অক্টোবর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল, ৫ অক্টোবর রোড ব্লক, ৬ অক্টোবর টোটাল শাটডাউন ও ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা তাদের প্রতিনিধি দল নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে চান।