ঢাকা ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ময়লার ভাগাড়

জনজীবনে দুর্ভোগ
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে ময়লার ভাগাড়

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল বেষ্টন করে আছে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক। প্রতিদিন হাজারও পোশাক শ্রমিকের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষের চলাচল এই পথে। তবে এই মহাসড়কের বাইপাইল শাহরিয়ার গার্মেন্টস এর বিপরীত পাশে মহাসড়কে তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগাড়। ফলে মহাসড়কের এই অংশ দিয়ে চলাচলরত জনজীবনে নেমে এসেছে নাভিশ্বাস। মহাসড়কের এই অংশ সাভার উপজেলাধীন স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। একটি চক্র একটা নির্দিষ্ট অংকের টাকার বিনিময়ে এই এলাকাসহ আশেপাশের এলাকার গৃহস্থালি ও হাট-বাজারের বর্জ্য ছোট ছোট ভ্যানে করে এনে পাহাড়সহ এই ভাগাড় তৈরি করেছে।

যার সিংহভাগ পলিথিন। ফলে দুর্গন্ধের পাশাপাশি পলিথিনের কারণে পরিবেশ হচ্ছে বিপর্যস্ত। এদিকে, এই ভাগাড়ের নোংরা-ময়লা ও পলিথিন- বৃষ্টিতে ও বাতাসে ভেসে এবং যানবাহনের চাকায় করে অদূরে বয়ে যাওয়া বাইপাইল এলাকায় বংশী নদীর শাখা খাল ‘নলীর পাড়' এ মিশে যায়। ফলে সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত মানুষ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া, ময়লা-আবর্জনার কারণে এলাকায় মশা, মাছি ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মক ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা জানান, বর্জ্য-আবর্জনা থেকে বাতাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে রোগ-ব্যাধি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ওই ময়লা থেকে মশা-মাছি উঠে এসে বাসা-বাড়ির খাবার ও কাপড়-চোপড়ে বসে। এতে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু, পাতলা পায়খানা, আমাশয়সহ পেটের বিভিন্ন রোগ-বালাই ছড়াচ্ছে। এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এভাবে মহাসড়কে আবর্জনা ফেলে ময়লার স্তুপ বানিয়ে রেখেছে। এই ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে আমরা পথচারীরা অতিষ্ঠ, দুর্গন্ধে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। এগুলো কী দেখার কেউ নেই?

মানিকগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম জানান, রাস্তার পাশে ময়লা ফেললে মানুষজনের দুর্গন্ধের শিকার হবার পাশাপাশি রাস্তার ক্ষতি হয়। নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের কয়েকটি জায়গায় এভাবে ভাগাড় তৈরি হয়েছে। মূলত পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সড়কের জায়গায় ময়লা ফেলা হয়।

সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা মৌখিক ও লিখিতভাবে মহাসড়কে ময়লা না ফেলার জন্য অনুরোধ করেছি। এ ছাড়াও একটা নির্দিষ্ট বিরতি নিয়ে আমাদের ‘স্ক্যাভেটর’ দিয়ে ময়লা সরিয়ে দূরে ফেলে দিয়ে আসি। কিন্তু এরপরও কোনোভাবে এই ময়লা ফেলা আমরা বন্ধ করতে পারছি না। যারা ময়লা ফেলছে তারা এটা বন্ধ না করলে আমাদের জন্য এটা বন্ধ করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম রাশিদুল আলম জানান, ময়লার ভাগাড় এর কারণে মাটি, পানি, বায়ু ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন বর্জ্য উন্মুক্তভাবে ফেলায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই সরকারের উচিত পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।

বিষয়টি সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সরকারকে অবগত করা হলে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত