ঢাকা ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নারায়ণগঞ্জে ছয় হাজার স্কয়ার ফুটের ক্যালিগ্রাফি

ফুটে উঠেছে সম্প্রীতির বন্ধন ও ঐকের প্রতিচ্ছবি
নারায়ণগঞ্জে ছয় হাজার স্কয়ার ফুটের ক্যালিগ্রাফি

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে আরবি-বাংলা এবং বিভিন্ন দৃশ্য সম্বলিত নান্দনিক গ্রাফিতি। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পূর্বঢালের দেয়ালে সম্প্রীতির বন্ধন ও ঐকের প্রতিচ্ছবি নিয়ে আঁকা প্রায় ছয় হাজার স্কয়ার ফুটের বিশাল ক্যালিগ্রাফিতে মুগ্ধ ও বিস্মিত আপমার জনসাধারণ। কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর লাল-সাদা রঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সৃজনশীল এই শিল্পকর্ম। মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত পূর্বাঞ্চলের ১৮ জেলার মানুষজন মুগ্ধ হয়ে অবচেতন মনে তাকিয়ে থাকেন নান্দনিক এ ক্যালিগ্রাফিতে। তাদের মনের মধ্যে অজান্তেই জেগে উঠছে সুন্দর ও ঐক্যের সুপ্ত চেতনাবোধ, নাড়া দিয়ে উঠে বিবেক। সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের প্রতিজ্ঞায় নিজের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে অঙ্গিকারবোধ। এরই মধ্যে ক্যালিগ্রাফির ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্ট্রগ্রামসহ নেট দুনিয়ায়। নান্দনিক এই শিল্পকর্ম প্রশংসায় ভাসছে নেটিজেনদের। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আল- জাজিরাতেও এই গ্রাফিতি নিয়ে ভিডিও সম্প্রচার করেছে। চোখ ধাঁধানো এই ক্যালিগ্রাফি আঁকতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ নামে একজন শিল্পী। তার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর প্রচেষ্টায় এই ক্যালিগ্রাফি সম্পন্ন করতে প্রায় ১২ দিন সময় লেগেছে। এই ক্যালিগ্রাফির শুরুতেই ডান দিক থেকে আরবিতে লেখা রয়েছে একতাই শক্তি। মাঝে মুষ্টিবদ্ধ দুটি হাত। এই সিম্বলটি দিয়ে বিশ্বের শৌষণের শিকার বিভিন্ন জাতীকে বুঝানো হয়েছে। চতুর্পাশে রয়েছে ইনকিলাব, ইত্তিহাদ, ইন্তিফাদার ম্যাসেজ। এর শেষ প্রান্তে রয়েছে একটি বার্তা ‘একতাবদ্ধ হলে চীন, আরব, হিন্দ এবং পুরো বিশ্বটাই আমাদের হবে, ইনশাআল্লাহ’। মোল্লা মোহাম্মদ হানিফ এক বার্তায় বলেন, এই গ্রাফিতিতে মূল যে বার্তা দেয়া আছে ‘সেটি হলো একতাই শক্তি। এটা আমাদের মৌলিক বার্তা। একতাবদ্ধ হয়ে আমরা যেমন স্বাধীনতা এনেছি, তেমনি একতাবদ্ধ হয়েই আমাদের সংস্কারকাজ করতে হবে। এই দুটির মেলবন্ধনই আমাদের গ্রাফিতিতে ফুটিয়ে তুলেছি’। জানাগেছে, এই ক্যালিগ্রাফী সম্পন্ন করতে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রবাসী ও সাধারণ মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় এই অর্থ সংগ্রহ করতে তেমন কষ্ট হয় নি। পাশাপাশি সবাই বিনা পরিশ্রমে স্বতষ্ফুর্তভাবে কাজটা করেছে। ক্যালিগ্রাফি দেখে অনেকটা আবেগপ্লাবুত হয়ে উঠা শিক্ষার্থী লামিয়া আহমেদ সুপ্তিসহ অনেকেই বলেন, আরবি হরফ দিয়ে এতো সুন্দর লেখা ফুটিয়ে তোলা যায় তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। ক্যালিগ্রাফিটা দেখে যেটা বুজতে পারছি সেটা হলো সম্প্রীতির বন্ধন ও ঐক্যের বিকল্প নাই। নিজের মধ্যে এমন একটি আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে আমরাই রক্ষা করবো আমাদের মাতৃভূমিকে। আবারো এক হয়ে গড়ে তুলবো সুন্দর একটি বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে থাকবেনা কোনো বৈষম্য, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র। এতে করে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকলে আমরা বৈষম্যবিহীন সমাজের বাসিন্দা হতে পারবো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত