ঢাকা ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কাজেই আসছে না সেতু

টাকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে দশ গ্রামের মানুষ

টাকা দিয়ে নদী পার হচ্ছে দশ গ্রামের মানুষ

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা শাখা মানাস নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণ হয় দশ বছর আগে। সম্প্রতি বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং দুইপাড়ের অ্যাপোচ সড়ক ভেঙে যায়। বহুবছর ধরে সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় কাজে আসছে না ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি। দুই পাড়ের লোকজন টাকা দিয়ে নৌকায় পারাপার হতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৪ সালে সরকার ও ইউএসএআইডি সংস্থার অর্থায়নে তিস্তার শাখা মানস নদীর ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ টাকা ব্যয়ে ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য একটি বক্স সেতু নির্মাণ করে। সেতু নির্মাণ হলে স্থানীয়রা আনন্দিত হয়। প্রায় সাত বছর আগে বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং দুইপাড়ের অ্যাপোচ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় দশ গ্রামের হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর দুইপাড়ে অস্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণ করে। চলতি মাসে উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক বন্যায় পানির স্রোতে সেতুটির সংযোগ সড়কটি ভেঙে যায়। স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নির্মাণের প্রায় ৫ বছর পরে বন্যার পানির স্রোতে দুইপাড়ের মাটি ধসে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। কিন্তু গত পাঁচ বছর সংযোগ সড়ক নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিরা। এমন অবস্থায় সেতু পার হতে বাঁশ ও কাঠের সাঁকোটিই ছিল পারাপারের অন্যতম মাধ্যম। সেটিও এবার ধসে গেছে আকস্মিক বন্যার পানির স্রোতে।

এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় গোপীডাঙ্গা, আরাজী খোর্দ্দভূত ছাড়া, মৌলভী বাজারসহ অন্তত ১০ গ্রামের লোকজন বিভিন্নস্থানে যাতায়াত করেন। এছাড়া লালমনিরহাটের রাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের ভরসা এই সেতুটি। এর দুই প্রান্তের মাটি ধসে পড়ায় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরসহ দশ গ্রামের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন টাকা দিয়ে নৌকায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে। গত সোমবার মৌলভি বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হেলে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর পশ্চিম পাড়ে সড়ক ভেঙে গেছে। দুইপাড়ের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার মানুষ নৌকায় পারাপার হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, সেতুটির দুইপাশে ধসে যাওয়া মাটির সংযোগ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে মূল সেতুর সাথে চলাচল উপযোগী করা হোক। সরকারি বরাদ্দ মিললে নতুন করে সেখানে সেতু নির্মাণেরও দাবি করছেন গ্রামবাসী। বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছাড় আলী বলেন, দুই পাড়ের লোকজনের ভোগান্তি লাগবে জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু সেটি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন উদ্যোগ নিলে দুইপাড়ের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। সেতুটির সংযোগ সড়কের সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির এলাকা সরেজমিন সার্ভে করা হয়েছে। আকস্মিক বন্যার পানির তোড়জোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে একটি দল আসবে এবং তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। অর্থ বারদ্দ সাপেক্ষে নতুন করে সেতু নির্মাণসহ অ্যাপোচ সড়কের কাজ করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক জানান, খুব দ্রুত সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সাঁকো নির্মাণ করা শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত