ঢাকা ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাশাপাশি কবরে শায়িত বাবা-ছেলে ও মেয়ে

পাশাপাশি কবরে শায়িত বাবা-ছেলে ও মেয়ে

পাশাপাশি কবরে শায়িত হয়েছে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ভিমরুলের কামড়ে মারা যাওয়া বাবা ও দুই শিশু সন্তান। এ ঘটনায় পরিবার ও স্বজনদের পাশাপাশি শোকে কাতর স্থানীয়রাও। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার পোড়াকান্দলিয়া ইউনিয়নের দুধনই গ্রামে একই সঙ্গে তিনজনের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব?িপুল সংখ?্যক ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ গ্রহন করে। এ সময় হাজার হাজার মানুষের অশ্রুসজল বিদায়ে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে পাশাপাশি তিনটি কবরে মৃত বাবা, ছেলে ও মেয়ের দাফন করা হয়। স্থানীয় পোড়াকান্দলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মঞ্জরুল হক বলেন, আমাদের এলাকায় এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আর দেখিনি। একই সঙ্গে এক পরিবারের তিনজনের এক সঙ্গে জানাযা আগে কখনো হয়নি। ঘটনাটি অত?্যান্ত মর্মান্তিক। এ সময় তিনি আরো বলেন, অনেক ভালো মানুষ ছিল মাওলানা আবুল কাশেম (৫৫)। অভাব অনটনের মধ্যেও পাঁচ সন্তান নিয়ে ভালোই কাটছিল তার সংসার।

কিন্তু ভিমরুলের কামড়ে দুই শিশু সন্তান নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন পরপারে। বতর্মানে তার সংসারে স্ত্রী ছাড়াও আরো দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এর মধে?্য সবার বড় ছেলের নাম হেদায়েতুল্লাহ। সে কোরআনে হাফেজ হয়ে একটি মাদরাসা শিক্ষকতা করে সংসারে বাবার সঙ্গে হাল ধরেছিল। তার ছোট ভাই এহসানুল্লাহ হাফেজি শেষ করে বতর্মানে মাওলানা লাইনে লেখাপড়া করছে। আর বোনদের মধ্যে বড়জনের এরই মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মৃত আবুল কাশেমের ভাতিজা মো. মোকসেদুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে চাচা আমার সেনেটারি দোকানে বসেছিল। কথা ছিল বাড়ি যাওয়ার আগে আমার ঘরে খেয়ে যাবে। তখন চাচা একটি ডিঙি ন?ৌকায় তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি পাশে একটু দূর থেকে রান্নার লাকড়ি আনতে যায়। সেখানে বাঁশ ঝাড়ে থাকা একটি ভিমরুলে চাকে হঠাৎ আঘাত লাগে নে?ৗকার লগিতে। এতে ভিমরুল আক্রমণ করলে মারাত্মক ভাবে আহত হয় তারা। এ সময় আমার চাচা তার শিশু সন্তানদের বাঁচাতে নিজের পিঠ পেতে দিয়ে ওদের বুকের নিচের ঝাপটে রেখে ছিলেন। কিন্তু কোনকিছুতেই শেষ রক্ষা হয়নি। পরে আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেয়া হলে একে একে সবাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এদিকে এ ঘটনার খবরে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন। এ সময় তিনি মৃতদেহ দাফন কাপনের জন?্য বিশ হাজার এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল হক দশ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত