আকস্মিক বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে লক্ষাধিক পরিবার

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ময়মনসিংহ ব্যুরো

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সম্প্রতি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলায় আকস্মিক এই বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষত। এমন ক্ষত চিহ্ন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন লক্ষাধিক পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির আমন ধান, মাছের ঘের, রাস্তা, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা।

এতে এ তিন উপজেলার কৃষি, মৎস্য ও যোগাযোগ খাতে সবমিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি। গত ৪ অক্টোবর পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে ময়মনসিংহের তিন উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন দুই লক্ষাধিক মানুষ।পানিতে তলিয়ে গেছে লক্ষাধিক হেক্টর জমির আমন ধান, পচে গেছে সবজি-খেতের ফসল। ভেসে গেছে খামারের মাছ। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে প্লাবিত গ্রামগুলোর অধিকাংশ সড়ক। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের সংকটও। এই ক্ষয়ক্ষতির ফলে অনেক পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস নষ্ট হয়ে গেছে, যা খাদ্যনিরাপত্তার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রমে কিছুটা সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এদিকে ক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়ানো লোকজন বলছেন, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন এ অঞ্চলের মানুষ। বন্যার পানিতে বহু মানুষের ঘরের সব মালপত্র ভেসে গেছে পানিতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখনো খোলা আকাশের নিচে আশ্রয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক নাসরিন আক্তার বানুর তথ্য মতে, বন্যায় সবচেয়ে বেশি রোপা আমনের জমি নষ্ট হয়েছে ধোবাউড়া উপজেলায় ১০ হাজার ৫৬০ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ২৫০ কৃষক। ১০ হাজার ৩১০ হেক্টর আমনের জমি নষ্ট হয়েছে হালুয়াঘাটে। এ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ২৭৫ কৃষক। ফুলপুরে নষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমি, ১৫ হাজার ৬০০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর ময়মনসিংহের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত কবীর বলেন, এই বন্যায় তিনটি উপজেলায় রাস্তাঘাট ও ব্রিজ কালভার্ট ভেঙে ১৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম জানান, আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের চেষ্টা করছি। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে।