গৃহকর্মী নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন

নির্যাতনবিরোধী আইন প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রাজধানীর বসুন্ধরায় ১৩ বছর বয়সি গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় প্রতিনিধিদল ভুক্তভোগীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিতের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। পাশাপাশি, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কমিশনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা করার আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ গ্রহণ করেছে এবং সরেজমিন তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। পরিদর্শনকালে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগী গৃহকর্মীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার শরীরে ক্ষত ও জখমের চিহ্ন দৃশ্যমান। যে শিশুর আজ পরিপূর্ণ অধিকার নিয়ে সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার কথা, সে অমানবিক শারীরিক ও মানসিক উভয় নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ ধরনের অপরাধ কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া বা শিথিলতা দেখানোর সুযোগ নেই। দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কমিশন এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তিনি আরও বলেন, গৃহকর্মীদের উপর নিয়মিতই নির্যাতন ও অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন ইতোমধ্যেই আইনের খসড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

আশা করা যায়, অতসত্বর আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আইন জারি করা হবে। প্রতিটি ঘটনায় আইনি সুরক্ষা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, সামাজিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, ইতিবাচক মানসিকতার গঠন এবং নৈতিকতা ও মানবিকতার চর্চা বাড়াতে হবে। নির্যাতনের শিকার কল্পনার মায়ের সাথে আলাপকালে জানা যায়, কল্পনাকে কাজে নিয়োজিত করার পূর্বে অভিযুক্ত জিনাত জাহান আদরের বাবা-মার সাথে আলাপ করেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। এক্ষেত্রে জিনাতের বাবা-মার দায়িত্ব ছিলো নজর রাখা যা করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং তাদেরও বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজন রয়েছে বলে কমিশন মনে করে।

উল্লেখ্য, পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।