চরম আর্থিক সংকটে পড়ে হতাশায় পুরো পরিবার

সুচিকিৎসার অভাবে বিছানায় কাতরাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ রুহুল

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সুচিকিৎসার অভাবে তিন মাস ধরে বিছানায় কাঁতরাচ্ছেন সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা রুহুল আমিন। তার এ অবস্থায় চরম আর্থিক সংকটে পড়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছে পুরো পরিবারটি। আহত রুহুল আমিন ও তার পরিবারের দাবি, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তাদের খোঁজ নেন নি এবং কোন ধরনের আর্থিক সহায়তাও পান নি তারা। তবে বিষয়টি জানতে পেরে রুহুল আমিনের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। বাসায় গিয়ে স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সদা হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত ও সুস্থ সবল মানুষটি এভাবে হুইল চেয়ারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন তা কল্পনাও করেন নি পরিবারের সদস্যরাসহ রুহুল আমিনের বন্ধু-বান্ধব এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনরা। হুইল চেয়ারই এখন রুহুল আমিনের চলাফেরার একমাত্র ভরসা। এ ছাড়া বাকি সময় কাটছে বিছানায় শুয়ে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করে। স্বজনরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার লাধুরচর গ্রামের রুহুল আমিন গত এক যুগ ধরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মুক্তিনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। বড় ছেলে মো. রনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ও ছোট ছেলে ইসমাঈল হোসেন নিরব মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রুহুল আমিনের স্বল্প আয়ের উপরই নির্ভরশীল তার পুরো পরিবার। দীর্ঘ আলাপচারিতায় শয্যাশায়ী রুহুল আমিন জানান, গত ২০ জুলাই সকালে ব্যবসার কাজে পৈতৃক বাড়ি সোনারগাঁ যান তিনি। কাজ সেরে বিকালে বাসায় ফেরার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর নীচে সোনারগাঁয়ের সেনপাড়া এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের মাঝখানে আটকা পড়েন তিনি। চারপাশে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে ভয়ে ও আতঙ্কে নিজেকে রক্ষা করতে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হন। রুহুল আমিন বলেন, গোলাগুলির সময় ভয়ে আতঙ্কে আমি যখন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলাম ঠিক সেই।

মুহূর্তে আচমকা রাইফেলের একটি গুলি আমার ডান পায়ের হাঁটুর নীচে বিদ্ধ হয়। তখন আমি রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে জ্ঞাণ হারিয়ে ফেলি। গুলিটি দুটো হাঁড় ভেঙে পায়ের অপর পাশ দিয়ে মাংস ভেদ করে বেরিয়ে যায়।