জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে চারিত্রিক সনদপত্র নিতে গিয়ে হেনস্তার স্বীকার হতে হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থীর নাম হেলাল খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ব্যাচের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের ২য় ব্যাচের শিক্ষার্থী। জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশের এস আই নিয়োগ পরীক্ষার জন্যে কাগজপত্র সংগ্রহ করছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হেলাল খান। এস আই এর মাঠের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ খুঁজতে গিয়ে দেখেন সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ কর্তৃক চারিত্রিক সনদপত্র নেই। সেই সনদপত্র তুলতে ফরিদপুর থেকে বিভাগে আসেন হেলাল। দুপুরে এসে হেলাল দেখতে পান কোন শিক্ষক নেই। এরপর হেলাল চেয়ারম্যানকে কল দিলে চেয়ারম্যান রোববার দেখা করতে বলেন কিন্তু এস আইয়ের মাঠ গতকাল শুক্রবার। এরপর আইন অনুষদের ডিনকে কল দিয়ে সুপারিশ করেন হেলাল। হেলালকে ডিন পরামর্শ দেয় কাগজপত্র নিয়ে চেয়ারম্যানের বাসায় গিয়ে সাক্ষর আনতে। এরপর সাক্ষর আনতে যেতে চাইলে অফিস সহকারীরা চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে চেয়ারম্যান জানান, হেলাল যেন রোববার এসে কাগজ সংগ্রহ করেন। এরপর শিক্ষার্থী হেলাল আইন বিভাগের শিক্ষকদের স্মরণাপন্ন হোন। আইনের আসাদুজ্জামান শাদী স্যার ডিনকে ফোন করে অনুমতি নিয়ে এরপর সেই শিক্ষার্থীকে চারিত্রিক সনদপত্র সংগ্রহ করে দেয়। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি পোস্টে সেই শিক্ষার্থী লেখেন, আমি আনুমানিক ১টার সময় আমার ডিপার্টমেন্ট অফিসে যায় একটা চারিত্রিক সনদপত্র আনতে। যেইদিন সনদ আনতে যায় সেইদিন বুধবার, অফিস কর্মচারীদের বলি সনদপত্রটা আমার এই মুহূর্তে খুবই জরুরি শুক্রবার আমার এসআই মাঠ। তখন অফিস সহায়ক আমাকে বললো, ডিপার্টমেন্টে এখন কোনো টিচার নাই, চেয়ারম্যান ম্যামের স্বাক্ষর ছাড়া চারিত্রিক সনদপত্র দেয়া হয় না। আমি চেয়ারম্যান ম্যামকে ফোন করলাম। বললাম ম্যাম আমার আগামী গতকাল শুক্রবার পুলিশের মাঠ, একটা চারিত্রিক সনদপত্র লাগবে। অনিবার্য কিছু কারণে আমার ডিপার্টমেন্টে আসতে দেরি হয়ে গেছে, আরো একদিন আগে আসা উটিত ছিল। এমতাবস্থায় ম্যাম আমাকে একটা সলুশন দেন, প্রয়োজনে আমি আপনার বাসায় আসবো আমাকে সাইন টা করে দিবেন অথবা যে কোনো একটা সলুশন দেন আমাকে অতি জরুরি বিবেচনায়। চেয়ারম্যান ম্যামের উত্তর শুনে আমি কিছুক্ষণ ব্ল্যাকআউট হয়ে ছিলাম, উনি আমাকে বললো কোনো সলুশন নাই। তুমি রবিবারে এসে সনদ নিয়ে যেও, রবিবারের আগে সনদ দেয়া যাবে না। এটা তোমার দেরি করার শাস্তি, যাতে ভবিষ্যৎ এ আর কোনো কাজে লেট না করো। তখন নিরুপায় হয়ে ফোন করলাম আমার ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান এবং আইন অনুষদের বর্তমান ডিন খ্রিস্ট্রিন রিচার্ডচন ম্যামকে। ম্যাম ইমার্জেন্সি অনুধাবন করে আমাকে বললো ডিপার্টমেন্ট থেকে কাগজ নিয়ে চেয়ারম্যান ম্যামের বাসায় চলে যেতে সাইনের জন্য। অফিস সহায়ক ম্যামের বাসায় আমাকে পাঠাবে কী না তার পারমিশনের জন্য অফিস থেকে চেয়ারম্যান ম্যামকে আবার ফোন করলো। ম্যাম সরাসরি প্রত্যাখান করে দিয়ে বললো আমি তো বলেছি আজকে কোনো ভাবে সাইন করা সম্ভব না, ওকে বলো রবিবারে আসতে। তখন আমি ডিন ম্যামকে আবার ফোন দেয় কিন্তু আমার ফোন ডিন ম্যাম কেটে দিলেন। দুইমিনিট পরে ডিন ম্যাম নিজে অফিস সহায়ককে ফোন দিয়ে পরিস্কার বলে দেয় আজকে কোনোভাবেই চারিত্রিক সনদপত্র দেয়া হবে না, রবিবার ছাড়া। এ বিষয়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শারমিন আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে আইন অনুষদের ডিন খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন বলেন, আমি শরীর খারাপ থাকায় চলে এসেছি। কাল একজন শিক্ষার্থীর সাথে আমার কথা হয়। আমি তাকে বলি চেয়ারম্যানের বাসায় গিয়ে সাক্ষর আনতে যেহেতু সে কাছে থাকে। এরপর আমি চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর আইনের শাদী স্যার আমায় কল দিলে আমি চারিত্রিক সনদপত্র দেয়ার অনুমতি দেই।