এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

চলতি মাসেই কাজ শুরুর আশা

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

আর্থিক সংকট আর অংশীদারি মামলার জটিলতায় প্রায় আট মাস ধরে বন্ধ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেষ ধাপের কাজ আবার শুরু হওয়ার আশা জেগেছে। প্রকল্প পরিচালক বলছেন, সমস্যা মিটে যাওয়ায় নভেম্বর মাসেই ফের কাজ শুরু হতে পারে।

আর সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে নির্ধারিত সময়েই ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পুরো নির্মাণকাজ শেষ করার আশা করছে সেতু বিভাগ। ঢাকার কাওলা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রথম অংশে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয় অংশে বনানী রেল স্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং তৃতীয় অংশে মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাওলা থেকে কারওয়ানবাজার পর্যন্ত অংশ নির্মাণকাজ শেষে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। কারওয়ানবাজার থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পায়ার নির্মাণ হয়েছে, বাকি অংশের কাজ শুরু হয়নি। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ এলাকার কারওয়ানবাজার থেকে খিলগাঁও পর্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নির্মাণকাজ বন্ধ। পান্থকুঞ্জ ও কমলাপুর এলাকায়ও কাজ চলছে না। মগবাজার হয়ে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত ৫৫৪ নম্বর পায়ার পর্যন্ত পায়ারের কাজ হয়েছে। তবে সেগুলোতে গার্ডার বসানো হয়নি। মালিবাগ রেলগেট থেকে খিলগাঁও পর্যন্ত সড়কের মাঝখানে টিনের বেড়া ঘিরে দেয়া হয়েছিল। তার ভেতরে এক্সপ্রেসওয়ের পায়ার নির্মাণের জন্য পাইলিং করা হচ্ছিল। তবে গত জুলাইয়ের পর থেকে সেখানে কাজ বন্ধ। দুপাশের বেড়া খুলে দেয়া হয়েছে, নির্মাণ এলাকার ভেতর দিয়ে এখন যানবাহন চলাচল করে। মগবাজার এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের একটি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড আছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে ভেতরে যন্ত্রপাতি রাখা, দুই পাশের ফটকে তালা মারা।

জানতে চাইলে এক কর্মী বলেন, কাজ বন্ধ। আমি এখানে আসছি পাঁচ মাস হইছে। আইসাও কাজ বন্ধই দেখছি। আবার কবে শুরু হবে তা স্যারেরা বলতে পারবে। ওই কর্মী তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, সে সময় ওইখানে কর্মকর্তাদেরও কেউ ছিলেন না। মগবাজার রেলক্রসিংয়ের কাছে আছে আরেকটি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড।

সেখানে নির্মাণকাজে নিয়োজিত চীনা প্রকৌশলীরাও থাকেন। সেখানকার একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, চীনা প্রকৌশলীদের অনেকেই এখানে নেই গত কয়েক মাস ধরে। নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় তারা চলে গেছেন। তবে ওই কর্মী শুনেছেন, তারা আবার আসবেন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বাকি অংশের কাজ কবে শুরু হবে জানতে চাইলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক এএইচএম সাখাওয়াত আখতার বলেন, সিঙ্গাপুরে ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারে প্রকল্পের উদ্যোক্তা ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের (ইতালথাই) যে সালিশ নোটিশ ছিল, তা ২০ অক্টোবর খারিজ হয়ে গেছে। তাতে ইতালথাইয়ের শেয়ার চলে যাবে চীনের দুই কোম্পানি শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ এবং সিনো হাইড্রো কর্পোরেশনের হাতে। ‘ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান চায়না এক্সিম ব্যাংক এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না (আইসিবিসি) অর্থায়ন বন্ধ রেখেছিল। শেয়ার ট্রান্সফার হওয়ার পর সেটা আবার চালু হয়ে গেছে। এখন অর্থ ছাড়া শুরু হলেই নির্মাণকাজ ফের শুরু হবে। আমরা আশা করছি সব ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরের মধ্যেই নির্মাণকাজ ফের শুরু হয়ে যাবে।’

এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, নভেম্বরে কাজ শুরু হলে আগামী জুনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। ‘এখনও অনেক সময় আছে, ৮ মাস। এখনও কাজ বাকি আছে ২৫ শতাংশ। প্রতি মাসে যদি ২ পার্সেন্টের বেশি কাজ করে তাহলে ওই সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। আমরা তাদের বলেছি এই টাইমের মধ্যে শেষ করতে। তারা এর আগেও তিন শিফটে কাজ করেছে। তাদের বলেছি যে সময়টুকু নষ্ট হয়েছে সেটা যেন পুষিয়ে দেয়।’