রাজশাহীতে ভালো ফলন আরো অধিক লাভজনক হওয়ায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। সরকারি প্রণোদনার বীজ নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজের বীজ বপনের পরও হয়নি আশানুরূপ ফলন। আর ফলন ভালো না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ও সর্বশান্ত হচ্ছে কৃষকরা। বীজের মান অনুসন্ধানে বিএডিসির বীজ বিপণন বিভাগকে চিঠি দিয়েছে রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তর। জানাগেছে, লাভজনক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসূচিতে, গত অর্থবছর রাজশাহী জেলায় সরকারি প্রণোদনা আওতায় ভারতীয় নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষাবাদ করে লাভবান হয় কৃষকরা। চলতি অর্থবছরে সরকারি প্রণোদনার আওতায় দুই ধাপে রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলায় ২৮ হাজার জন কৃষকের মাঝে ২৮ হাজার কেজি বীজ, ৩৬০ টন ডিএপি ও এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করেন। সঠিক সব নিয়ম মেনে জমিতে বীজ রোপন করার ৬০ দিনের মধ্যে গুটি হয়ে যায়। এর ফলে বাইল বন্ধ হয়ে পেঁয়াজের গাছ মারা যাচ্ছে। আবার একটু বড় হলেও গাছ পচন এবং শিকড় হয়ে মারা যাচ্ছে। ফসলে ঔষধ ও কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাচ্ছেনা কৃষকরা। এ অবস্থায় আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা। প্রণোদনরার পেঁয়াজ চাষে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ায়, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতি পুশিয়ে নেয়ার জন্য সহযোগীতার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান কৃষকরা। চলতি অর্থবছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার মেক্টিক টন। তবে আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় লক্ষমাত্রা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। চারঘাট উপজেলার ভাটপাড়া এলাকার কৃষক আ. খালেক জানান, সরকারি প্রনোদনা পেয়ে ৮ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের করে ফলন ভালো পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই উপজেলার ভাটপাড়া এলাকার কৃষক বাদিউজ্জামান জানান, সরকারি প্রনোদনা পেয়ে ৮ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের করে ফলন ভালো পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই উপজেলার ভাটপাড়া এলাকার কৃষক সোহেল জানান, সরকারি প্রনোদনা পেয়ে ৮ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের করে ফলন ভালো পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুঠিয়া উপজেলা বিড়ালদহ এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান জানান, পেঁয়াজের যে আমাদের কে দিয়েছে সে বীজ গত বারের চাইতে এবার খারাপ। তাই ফলন ভালো না হওয়ায় লোকশান ব্যাপক হয়েছে।
পুঠিয়া উপজেলা বিহারীপাড়া এলাকার কৃষক আবুল বাসার, এক একর জমিতে প্রনোদনার বীজ লাগিয়ে ফলন না হওয়ায় প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুঠিয়া উপজেলা বিহারীপাড়া এলাকার মঞ্জুর রহমান জানায়, এবার সারকারি প্রণোদনার বিজ খারাপর দেয়ার আমরা প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা জানান, রাজশাহী জেলায় এ বছর আমাদের প্রথম ধাপে ৮ হাজার জন কৃষক এবং দ্বিতীয় ধাপে ২০ হাজার জন কৃষককে বিআরডিসি থেকে বীজ প্রদান করা হয়েছে। প্রথমবার আমাদের এই বীজ বিআরডিসি থেকে পাওয় গেছে। তবে গত বছরের কৃষকরা সেখানে পেয়াজ চাষ করে প্রচুর লাভবান হয়েছে। পেয়াজের আকার আকৃতির রং খুবি আর্কষণীয় ছিল। তারি ধারাবাহিকতায় এ বছর আরো আগম পেয়াজের বীজ মাঠ পর্যায়ে আমাদের বীজ বপন এবং রোপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে পেয়াজ হারবিষ্ট শুরু হয়েছে। এ বছর আসলে আমাদের টেম্পারেচার বিশেষ করে তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত এই দুই টায় কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে এসেছিল তার কারনে কৃষকরা পেয়াজ মাঠ থেকে উত্তোলন করে বিক্রয় করছে। তবে পেয়াজের যে আকৃতির কথা আপনারা বলছিলেন, গত বছরের তুলোনায় কিছুটা ছোট সে ক্ষেত্রে আমরা এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি এবং সাথে সাথে যেহুতু বিআরডিসি আমাদেরকে বীজ সরবরাহ করেছে তাদেকও আমরা এ বিষয়ে জানিয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে পরবর্র্তী যা করনীয় সে বিষয়ে আমরা মতামত জানিয়েছি। তবে আমি যেটা বিশ্বাস করি বা যেটা দেখছি মাট পর্যায়ে বিশেষ করে সেপ্টম্বর-অক্টোবরের মাসে যে চারা গুলো লাগানো হয়েছে। সেগুলোর কিন্তু মাট পর্যায়ে পারফরমেন্স ভালো আছে। তো আসা করি আগামীতে এই পেয়াজ লাগিয়ে কৃষকরা লাভবান হবে। তারা সফল হবে এবং ক্ষতি হবে না।