নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অপসারিত মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন বলে জানান দুদকের একজন আইজীবী। দুদুকের পক্ষে আবেদন করেন, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী। গত ৩ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন। আবেদনে দুদক বলে, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, সাবেক মেয়র, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, নারায়নগঞ্জ পিতা: মৃত আলী আহাম্মদ চুনকা, সাং- ২০৬ পশ্চিম দেওয়াভোগ, থানা: ফতুল্লা, জেলা: নারায়নগঞ্জ এর দেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আবেদন করা হলো। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত সূত্র জানায়, দরখাস্তটি শুনানি হয়। দাখিলী কাগজপত্রসহ দরখাস্ত পর্যালোচনা করা হয়। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে দরখাস্তখানা মঞ্জুরযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় উহা মঞ্জুর করা হয়। সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগ রয়েছে সাবেক মেয়র আইভীর দুই ভাই আলী রেজী রিপন ও আহম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলায় সাততলা বিশিষ্ট একটি বিশাল বাড়ি, নারায়ণগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী চিত্তবিনোদন ক্লাব ভেঙে সেখানে একটি মার্কেট নির্মাণ, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৮ একর জমি দখল করে সেখানে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য সম্পদ ও দুর্নীতি ব্যতীত সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর নামে এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও তার নিকট আত্মীয়দের নামে থাকা সম্পদের অনুসন্ধান করবে সংস্থাটি।
সূত্রটি আরো বলছে, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে আবুল হোসেনকে নিয়োগ করা হয়। আবুল হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার নামে নারায়ণগঞ্জে রয়েছে চার-পাঁচটি ফ্ল্যাট। এ ছাড়া সাবেক মেয়র আইভীর ব্যক্তিগত সহকারী আরিফ হোসেনকে তার পদে পদায়ন না করে একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পদায়ন করা হয়।