বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক সংকট একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই, বেরোবিতেও শিক্ষকের সংখ্যা শিক্ষার্থীর তুলনায় যথেষ্ট কম, ফলে বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদান ও গবেষণা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১৯২ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪৪ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। অথচ ইউজিসির শিক্ষক শিক্ষার্থীর মানদ- অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর মেয়াদের দুই সেমিস্টারের স্নাতকোত্তরে পড়ানো হয় ১২ থেকে ১৪টি কোর্স। সে হিসেবে চার বছর মেয়াদের আট সেমিস্টারের স্নাতকে পড়ানো হচ্ছে ন্যূনতম ৪৮ থেকে ৫৬টি কোর্স। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এক শিক্ষককে নিতে হচ্ছে ৯ থেকে ১০টি কোর্স। শিক্ষক সংকটের নানা প্রভাব ও সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার মানে অবনতি, গবেষণার উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা, শিক্ষকদের অতিরিক্ত পাঠদান ও প্রশাসনিক কাজের চাপ, বিভাগের পাঠদান বিঘ্নিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হয়, যা তাদের শিক্ষাজীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস হ্রাস করে। জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগ পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি ১৬ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন করে শিক্ষক থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনো প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক আছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে অপ্রতুল। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে আরো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।’ উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট প্রকট। এইদিকে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের জড়িত দুই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেখানে গণিত বিভাগের একজন ও লোকপ্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে শিক্ষক নিয়োগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’ এদিকে গত ১৩ নভেম্বর শিক্ষক সংকট থাকায় ক্লাস নিতে দেখা যায় উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীকে।