নিষিদ্ধ হলেও দেশে ৩৫ লাখ শিশুশ্রমে নিয়োজিত

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশুশ্রম নিরসনে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে শিশুশ্রমের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যমর বিশেষ ভূমিকাও প্রত্যাশা করেছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

শিশুশ্রম নিরসনে গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা : আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংলাপে সভাপতিত্ব করেন এএসডি’র নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারপার্সন শামসুন্নাহার জলী। সংলাপে আলোচনায় অংশ নেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল মজুমদার, পিআইবি’র প্রশিক্ষক জিলহাজ উদ্দনি নিপুন, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প কর্মকর্তা হালিমা বেগম, সিনিয়র সংবাদিক রফিকুল ইসলাম আজাদ, আশীষ কুমার দে ও শরফুল আলম, এএসডি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউকেএম ফারহানা সুলতানা প্রমুখ।

সংলাপে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন এএসডির কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, আইনগতভাবে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও দেশে ৩৫ লাখ শিশু শ্রমে নিয়োজিত আছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ ৬৮ হাজার।

শ্রমে নিয়োজিত শিশুরা নানাধরনের শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব শিশু শ্রমিকেরা ভয়াবহ নির্যাতন এবং ক্ষেত্র বিশেষে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছে। এ ছাড়া অসংখ্য শিশু দীর্ঘ সময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করার ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে। এমতাবস্থায় শিশুশ্রম নিরসনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণমাধ্যমসমূহের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।

সংলাপে বক্তারা বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ ও কনভেনশনসমূহ স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশের সব শিশুর অধিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের এই প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার বাস্তবায়ন এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিশুশ্রম সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। সেক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।