এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে নগরবাসীকে হেঁটে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, এই এক-দেড় কিলোমিটার আপনারা অটোরিকশা ব্যবহার করবেন না। অটোরিকশা ব্যবহারে জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং রাস্তায় না করে খোলা জায়গায় করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই সমাজে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য অটোরিকশা প্রয়োজন। আমাদের বাস্তবভিত্তিক চিন্তা করতে হবে। তবে যে হারে অটোরিকশা বাড়ছে সেই হারে বাড়লে পুরো রাস্তা দখল করে ফেলবে, এরপর আপনারা কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। এটি হতে দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, অটোরিকশায় ৮০-৯০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে একজন প্রতিদিন ৫০০ টাকা পাচ্ছেন। আমি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কিংবা অন্য কোনো পেশায় আছি, ১০ লাখ টাকা ইনভেস্ট করে ১০টা নামিয়ে দিয়ে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা আসছে। এক লাখ টাকা ব্যাংকে রাখলে এখন মাসে পাবেন এক হাজার টাকা। এক লাখ টাকা ইনভেস্ট করে প্রতিদিন যদি ৫০০ টাকা আসে তাহলে খারাপ কি, এ জন্য অটোরিকশায় সবাই ইনভেস্ট করছে। তিনি আরো বলেন, সবাই যদি এভাবে ইনভেস্টে নেমে যান তখন আর চলাচলের রাস্তা থাকবে না। কোনো দিকে কেউ নড়তে পারবে না। আপনি আমি কেউ যখন অসুস্থ হবো তখন অ্যাম্বুলেন্স রাস্তা দিয়ে আসতে পারবে না। ঢাকা শহর অচল হয়ে যাবে। সরকারকে আমি জানিয়েছি যে অটোরিকশাগুলো আছে এর থেকে একটি অটোরিকশাও বৃদ্ধি পাবে না। ডিএমপি কমিশনার বলেন, অটোরিকশার কেউ ট্যাক্স দিচ্ছে না, তারা কোনো রেগুলেটরি বডির আন্ডারেও না, লাইসেন্স নেই। তাদের একটা নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। সেটা পুলিশ আনুক আর অন্য কেউ। তিনি বলেন, অটোরিকশা ব্যবসার সঙ্গে যারা আছেন তাদের বলবো আপনারা অটোরিকশা বৃদ্ধি করবেন না। আমি আর কাউকে অ্যালাউ করবো না।
অটোরিকশার ব্যাটারি অবৈধভাবে চার্জ হয়। ট্যাক্স, লাইসেন্স কিছুই নেই। এটি জটিল বিষয়। রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্য করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, এটি একটি স্বাধীন দেশ। আপনারা মিছিল-মিটিং করেন। এই দেশে বাকস্বাধীনতা আছে। আমরা এগুলোর নিরাপত্তা দিতেও প্রস্তুত। তবে আপনারা এমন কোনো জায়গায় মিছিল-মিটিং করবেন না, যে কারণে ট্রাফিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক সমস্যা হলে নগরবাসী ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তার ভেতরে আটকে থাকতে হয়। এতে গাড়ির তেল অপচয় হয়। এ কারণে ৩৬ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, মিছিল-মিটিং কিছু একটা হলেই রাস্তা বন্ধ। রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং কোনো একটা খোলা মাঠে করুন, তাহলে রাস্তা বন্ধ হবে না, নগরবাসীর ভোগান্তিও হবে না।