এ বছর অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রের কারণে বিভিন্ন সেক্টরে নিহত ও আহতের হার গত বছরের (২০২৩) তুলনায় যথাক্রমে ৩৬.৮ এবং ৫৬.৬ শতাংশ কমেছে। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি) ‘কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৪ প্রকাশ’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য জানান ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. এসএম মোর্শেদ।
১৫টি দৈনিক সংবাদপত্র এবং ওশি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাঠপর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। ড. এসএম মোর্শেদ জানান, চলতি বছরে অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রের কারণে বিভিন্ন সেক্টরে নিহত হয়েছেন ৯০৫ জন শ্রমিক।
আহত হয়েছেন ২১৮ জন শ্রমিক। আর বিগত ২০২৩ সালে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪৩২ জন এবং আহত হয়েছিলেন ৫০২ জন। ফলে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক নিহতের সংখ্যা কমেছে ৫২৭ জন বা ৩৬.৮ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা কমেছে ২৮৪ জন বা ৫৬.৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কর্মক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিহত শ্রমিকের সংখ্যা ১১৩ জন ও আহত শ্রমিকের সংখ্যা ৭৫ জন। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিহত শ্রমিকের সংখ্যা ৭৯২ জন ও আহত শ্রমিকের সংখ্যা ১৪৩ জন। প্রতিবেদনের সেক্টরভিত্তিক তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৫২২ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন ও আহত হয়েছেন ৫২ জন।
দিনমজুর নিহতের সংখ্যা ১৪৮ জন ও আহতের সংখ্যা ৭২ জন। নির্মাণ খাতে নিহত ৬২ জন ও আহত ৫ জন, কৃষিতে নিহত ৬১ জন ও আহত ১ জন, মৎস্য খাতে নিহত ২৫ জন ও আহত ১০ জন, পোশাক শিল্পে নিহত ৫ জন ও আহত ২৯ জন, বিভিন্ন সেবা খাতে নিহত ২৪ জন ও আহত ১ জন, জাহাজ ভাঙা খাতে (শিপব্রেকিং) নিহত ১১ জন ও আহত ৬ জন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে নিহত ৬ জন ও আহত ৩ জন, নিরাপত্তায় নিহত ৫ জন ও আহত ২ জন, গৃহস্থালির কাজে নিহত ৫ জন ও আহত ১ জন, চা শ্রমিক নিহত ৩ জন এবং অন্যান্য খাতে শ্রমিক ২৮ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছে।
ওশির প্রতিবেদনে কর্মস্থলে হতাহতের উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, অগ্নিকাণ্ড, ভবন বা স্থাপনা থকে পড়ে যাওয়া, বজ্রপাত, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, গৃহ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতন, দেয়াল-ভবন-ছাদ ধ্বস, বন্যপ্রাণীর আক্রমণ ও ভূমিধ্বসের কথা বলা হয়েছে।