ঢাকা ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ

চালু হচ্ছে ‘জনতার বাজার’

চালু হচ্ছে ‘জনতার বাজার’

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্যে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘জনতার বাজার’ নামে ন্যায্যমূল্যের বাজার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার জাকের ডেইরি ফার্ম সংলগ্ন সরকারি মাঠে এ উপলক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভায় এই ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানে ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহাম্মেদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই সরাসরি কৃষক ও ভোক্তাদের সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি বিশেষ বাজার চালু করা হবে। এ বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব এড়িয়ে কৃষক ও ভোক্তাদের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করা। এতে পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আমরা প্রাথমিকভাবে ঢাকার ছয়টি স্থানে এ ধরনের বাজার চিহ্নিত করেছি। পর্যায়ক্রমে এর পরিসর বাড়ানো হবে। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী এবং বেকার যুবকদের সম্পৃক্ত করা হবে। শুধুমাত্র খুচরা বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে এবং পণ্য ক্রয়ের জন্য একটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা পরিশোধ করে একটি কোড পাবেন, যা দেখিয়ে পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, আমরা চাই এই বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। সরকারের কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এই উদ্যোগে সহযোগিতা করবে। অংশগ্রহণকারী সবার মতামত ও সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এই উদ্যোগ সফল করতে আপনাদের পরামর্শ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন, একসঙ্গে কাজ করে এটি বাস্তবায়ন করি।

প্রস্তাবিত ন্যায্যমূল্যের বাজারের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো হলো- জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর-সংস্থার সহযোগিতায় বাজার পরিচালিত হবে। দেশের যে স্থানে যে পণ্যের দাম তুলনামূলক কম সেখান থেকে পণ্য সংগ্রহ ও পরিবহন করে সরাসরি ঢাকায় নিয়ে এসে বিক্রি করা হবে। ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় উদ্যোক্তা ছাত্র-জনতাকে দায়িত্ব দেয়া হবে। প্রতিটি পণ্য জেলা প্রশাসন-সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হবে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রকৃত পরিবহন খরচ এবং উদ্যোক্তাদেরকে প্রদেয় যৌক্তিক মুনাফা যোগ করে ন্যায্যভাবে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হবে। যে কোনো চাষি, খামারি বা উৎপাদনকারী উৎপাদিত নিজস্ব পণ্য সরাসরি উক্ত বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। হিসাব সংরক্ষণ ও সার্বিক কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণ করা হবে; যাতে প্রতিটি পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য অনলাইনে প্রদর্শিত হবে। জেলা প্রশাসক আরো জানান, ঢাকায় প্রাথমিকভাবে ছয়টি বাজার স্থাপন করা হবে। রমজান মাসে এই বাজারগুলোর মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ উদ্যোগের বিস্তৃতি ঘটানো হবে। এ উদ্যোগে স্থানীয় উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া পণ্য পরিবহন ও মান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজরদারি থাকবে। এলাকার বাসিন্দারা এ প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি বিশেষত নিম্নআয়ের মানুষের জন্য একটি বড় সহায়ক হবে বলে মতামত প্রকাশ করেছেন। তবে তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সভায় আশা প্রকাশ করা হয় যে, সব পক্ষের সমন্বয়ে এ উদ্যোগটি টেকসইভাবে পরিচালিত হবে এবং রাজধানীর মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, খাদ্য অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সভায় তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত