গাজীপুরে এসপি গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং লিমিটেড নামে একটি কারখানায় টয়লেটে গিয়ে ভূত আতঙ্কে হঠাৎ ১০-১৫ জন নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার (শিরিরচালা) এলাকায় ওই কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিকরা স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। আহত শ্রমিক মৌসুমি, আরিফা, নিপা, তাছলিমা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে কারখানায় অনেকে আলোচনা করছেন ওয়াশ রুমে জিন এবং ভূতের আনাগোনা করছে। গুজবে কারখানার সব শ্রমিক সকাল সোয়া ৯টার দিকে কারখানার নিচে নেমে হইচই শুরু করেন।
এ সব চিন্তায় কয়েকজন শ্রমিক ওয়াশ রুমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যায়। আমরা সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পায়ে শক্তি পাচ্ছিলাম না। পরে সিঁড়ির মেঝেতে পড়ে যাই। বেলা ১১টার দিকে আজকের জন্য কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।’ হাসপাতাল, অসুস্থ শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ তলা ভবনের এসপি গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং লিমিটেড কারখানায় দুই হাজার দুইশ শ্রমিক কর্মরত আছেন। সকালে কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন। সকাল ৯টার দিকে কয়েকজন নারী শ্রমিক ওয়াশরুমে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার সময় অনেকে উৎপাদন ফ্লোরে পড়ে যান। খবর পেয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ আহতদের উদ্ধার করে বাঘের বাজার (শিরিরচালা) হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা দেয়।
ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিহাব আহমেদ ইবনে জামান বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় এ সেন্টারে ৭-৮ জন রোগী এসেছেন। তাদের মধ্যে তিন জনকে অক্সিজেন এবং একজনকে স্যালইন দেয়া হয়। তারা সুস্থ হয়ে নিজেরাই বাসায় চলে গেছেন। কী কারণে নারী শ্রমিকেরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। হয়তো ভয় থেকে তারা অসুস্থ হয়ে থাকতে পারেন অথবা রোজা থাকার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এরকম হয়ে থাকতে পারে।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ওয়াশরুমে ভূতের ভয়ে ৭ নারী শ্রমিক গুরুতর আহত হলে তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে হলি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাছে ১০-১৫ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে চার জনকে তারা চিকিৎসা দিয়েছে। অন্যরা বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে।’
এদিকে, এসপি গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের কারখানায় প্রবেশ করতে দেয়নি। কোনো কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি।