বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রবাড়ীতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলা ও পুলিশের গুলিতে নিহত ঢাকা টাইমস পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেদী হাসান হত্যা আসামিদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন রয়েছেন তার পরিবার। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানবন্ধনে এ অভিযোগ করেন মেহেদীর পিতা ও হত্যা মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন।
মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্য মামলায় গ্রেপ্তার এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মেহেদী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের মধ্যে ১১নং আসামি মোহাম্মদপুর থানা ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম, ১৭নং আসামি যাত্রবাড়ি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর, ১৮নং আসামি যাত্রাবাড়ী থানা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল হক, ১৯নং আসামি যাত্রাবাড়ী থানার ৫০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, ২০নং আসামি ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও ২১নং আসামি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আমাকে বর্তমান নানাভাবে হুমকি অব্যাহত রেখেছে। মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করতে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। ফলে, আমি ও আমার পরিবার চরম নিরপত্তাহীনতায় রয়েছি। আমি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি।
মানবন্ধনে নিহত মেহেদীর মা মাহমুদা খাতুন বলেন, আমি সন্তান হত্যাকারী আসামিদের ফাঁসি চাই। আমার সন্তান নেই এটা মেনে নিতে পারি না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করে আমার ছেলের হত্যার সঠিক বিচার চাই। মানবন্ধনে এক পর্যায়ে মেহেদীর পিতা-মাতা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে সেখানে হৃদয় বিদায় দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
গত বছরের ১৮ জুলাই বিকালে যাত্রাবাড়ীর কাজলায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা ও পুলিশের গুলিতে মেহেদী হাসান নিহত হন। এরপর এ হত্যা মামলা নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর তার পিতা মোশাররফ হোসেন আদালতের দ্বারস্থ হলে শেষ পর্যন্ত ১৫ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন আদালত। সেখান থেকে থানার ওসি ৬ জনকে বাদ দিয়ে ২২ জনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করে যাত্রবাড়ী থানা। এছাড়া মামলার কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।