ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঘরে ফেরা মানুষের জন্য র‌্যাব ও পুলিশের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ঘরে ফেরা মানুষের জন্য র‌্যাব ও পুলিশের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষ তাদের কর্মস্থল থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরবেন। এই সময়ে যানজটের কারণে ঘরে ফেরা মানুষের অনেক ভোগান্তি হয়। কখনও যানজটের কারণে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়, আবার কখনও ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে তাদের অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েন। দীর্ঘ যাত্রার কারণে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা তো বেশ সাধারণ। ঘরে ফেরা মানুষের এই সব সমস্যা ও ভোগান্তি মাথায় রেখে রংপুরে র‌্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। যাত্রীদের জন্য অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র স্থাপন করার পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সও। এই সেবা ঈদের পরবর্তী সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব ও পুলিশ।

রংপুর বিভাগের একমাত্র প্রবেশদ্বার, নগরীর মডার্ন মোড়ে এই অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ঈদ উদযাপন করতে আসা ঘরে ফেরা মানুষ এবং ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে যারা সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তাদের সাহায্য করবে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চিকিৎসা সহায়তার জন্য দুটি সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। র‌্যাবের সেবা কেন্দ্রটির নাম দেয়া হয়েছে ‘র‌্যাব সাপোর্ট সেন্টার’ এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের সেবা কেন্দ্রটির নাম দেয়া হয়েছে ‘সাব কন্ট্রোল রুম’। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা এই সেবা কার্যক্রম চালু থাকবে। সেবাকেন্দ্রগুলোতে পানিসহ অন্যান্য সহায়তা সামগ্রীও থাকবে। গত বুধবার বিকালে নগরীর মডার্ন মোড় এলাকায় এই সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়।

এ বিষয়ে রংপুরে র‌্যাব-১৩ এর কমান্ডার এমজেড ইস্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই ঈদের পুরো সপ্তাহজুড়ে ঢাকাসহ দক্ষিণ অঞ্চল থেকে যারা পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে উত্তরাঞ্চলে আসবেন, তারা যেন কোনো ধরনের হয়রানি বা টিকিট কালোবাজারির শিকার না হন। যাত্রীদের যেন কোনো ভোগান্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। পুলিশ ও র‌্যাব মিলেই এই যাত্রীসেবা প্রদান করতে চাই। যারা ঈদ করতে বাড়ি আসছেন এবং ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরবেন, আমরা তাদের যাত্রাটা নির্বিঘ্ন করতে চাই।’ এ সময় তিনি সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, ‘ঈদে ঘরে ফেরা মানুষেরা অনেক সময় পথে বিপদ গ্রস্ত হন। তাদের সাহায্য করার মতো কেউ থাকে না। তবে এখন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা তাদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত। এছাড়া চিকিৎসা সহায়তার জন্য সেবাদানের দুটি সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাতে না হয়, সে জন্য সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে যানজট সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি রোধকল্পে মালিকপক্ষ, পুলিশ, র‌্যাব ও ট্রাফিক পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে মলম, অজ্ঞানপার্টি ও চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য যাতে না বাড়ে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।’ এদিকে, ঈদ উপলক্ষে রংপুর নগরীতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মার্কেটগুলোর সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং নগরীর অলি-গলিতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। কখনও কখনও সেনাবাহিনীকে নগরীর প্রধান প্রধান মোড়গুলোতে নজরদারি করতে দেখা গেছে। এছাড়াও নগরীর মূল সড়কে যানজট কমাতে এবং কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ভোগান্তি কমাতে নতুন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা চালু করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগ নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে রিকশা ও অটোরিকশাকে অন্য পথে ঘুরিয়ে চলাচল করাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত