ইট-পাথরের আর কংক্রিটের এ শহরে বুক ভরে শ্বাস নেয়ার জায়গা অনেক কম। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে কিছুটা স্বস্তি পেতে সবসময় উপলক্ষ্য খুঁজে বেড়ায় নগরবাসী। তেমনি একটি উপলক্ষ্য ঈদুল ফিতর। ঈদের তৃতীয় দিনে জনস্রোত নেমেছে রাজধানীর রমনা পার্কে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ ঘুরতে এসেছেন রমনায়। সকাল থেকে পরিবারসহ রমনা পার্কে মানুষের আগমন থাকলেও বিকেলের দিকে এসে পার্কটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। গতকাল বুধবার বিকেলে এ চিত্র দেখা যায় রমনা পার্কে। পার্কে আগতদের মধ্যে পরিবারসহ আসা মানুষের ভিড় ছিল বেশি। বিশেষ করে পার্কটির মধ্যে শিশুদের জন্য রাখা বিনামূল্যে বিভিন্ন রাইডের জায়গায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
ধানমন্ডি থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে রমনা পার্কে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মুতাসিম বিল্লাহ। তিনি বলেন, আইটি ফার্মে কাজ করি বিধায় এবার ঈদে ছুটি মেলেনি, যে কারণে পরিবারসহ ঢাকাতেই ঈদ করতে হয়েছে। ঈদের দিনের ব্যস্ততা, গতকাল আবার অফিসও ছিল, সে কারণে আজ সুযোগ বুঝে পরিবারসহ আজ পার্কে ঘুরতে আসলাম। রমনা পার্ক একটি সবুজে ঘেরা জায়গা। এই গরমে সবুজে পার্কে কিছুটা হলেও স্বস্তি আছে তাই এখানে আসা।
খিলগাঁও থেকে নিজের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন সালমা সুলতানা নামের একজন গৃহিণী। তিনি বলেন, এখানে খুব সুন্দর পরিবেশ, খোলামেলা অনেক বড় এলাকা, চারিদিকে সবুজ। এখানে এসে আমার বাচ্চাও খুব মজা করেছে, শিশুদের জন্য রাখা রাইডগুলো ব্যবহার করেছে। আমরা দুপুরের দিকে যখন আসি তখন তেমন ভিড় ছিল না। তবে বিকাল থেকে এমন অবস্থা যে পা ফেলার জায়গা নেই। প্রচুর মানুষের রান্নাবান্না হয়েছে আজ রমনা পার্কে। এখানে সবচেয়ে ভালো দিক হলো বাচ্চারা বিনামূল্যে রাইডগুলো ব্যবহার করতে পারে। তাই বাবা-মা তাদের সন্তানকে নিয়ে এখানে বেশি ভিড় করছেন। খোলামেলা পরিবেশ, বাচ্চাদের রাইড, পানির ওপরে ভ্রাম্যমাণ ব্রিজ সবকিছুর পাশাপাশি এখানকার লেকে নৌকা ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। প্রতি আধা ঘণ্টা সুসজ্জিত সিঙ্গেল নৌকায় ঘুরতে খরচ করতে হচ্ছে ৩০০ টাকা। এই নৌকায় ঘুরতেও মানুষ সেখানে ভিড় করছেন।
নৌকা ভ্রমণ শেষে যুগল আবির ও তৃষা বলেন, লেকের মধ্যে নৌকায় ঘোরার সার্ভিসটি বেশ ভালো, কিন্তু মাত্র আধা ঘণ্টার জন্য ৩০০ টাকা একটু বেশি হয়ে যায় সবার জন্য। এই বেশি ভাড়ার বিষয়টি ছাড়া পার্কে ঈদ বিনোদনের জন্য ঘুরতে এসে খুব ভালো লেগেছে। রমনা পার্কের ভেতর খেলনা বিক্রি করা ভ্রাম্যমাণ হকার খোরশেদ আলম বলেন, ঈদের পরদিন থেকে রমনা পার্কে মানুষের ঢল নেমেছে। আজও ঈদের তৃতীয় দিনে মানুষে ভরে গেছে।