রংপুরে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে দ্রুত রূপান্তরের দাবিতে এক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে DOPS, CLEAN এবং BWGED যৌথভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এটি একটি বৃহত্তর সারাদেশব্যাপী আন্দোলনের অংশ, যা ২০১৬ সালের বাঁশখালী আন্দোলনের স্মরণে আয়োজিত হয়, যেখানে ধ্বংসাত্মক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে ছয়জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা ‘জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতা শেষ করুন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণ করুন’ স্লোগানের মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরেন। তারা পরিবেশগত স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জ্বালানি নীতির প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
বক্তারা কয়লা, এলএনজি এবং অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানির বিনিয়োগের ভয়াবহ ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেন। তারা বলেন, বাঁশখালী ট্র্যাজেডি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে এই প্রকল্পগুলো কীভাবে সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি ডেকে আনে ভূমি দখল থেকে শুরু করে দূষণ ও জলবায়ু বিপর্যয় পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেন যে বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সৌর ও বায়ু শক্তির সম্ভাবনা, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
উঙচঝ-এর এক প্রতিনিধিগন সুবল চন্দ্র, লিপিকা ইয়াসমিন, যুব নেত্র আনিকা ইয়াসমিন এবং রিদয় হোসেন বলেন, ‘বাঁশখালীতে প্রাণ হারানো মানুষদের আমরা ভুলতে পারি না। সেই আন্দোলন দেখিয়ে দিয়েছিল, ক্ষতিকর জ্বালানি নীতির বিরোদ্ধে জনগণ কীভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আরও ক্ষতি হওয়ার আগে আমাদের নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর নিশ্চিত করতে হবে।’
মানববন্ধনের সমাপ্তিতে আয়োজকরা জাতীয় জ্বালানি নীতি জলবায়ু লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। অংশগ্রহণকারীরা প্রতিশ্রুতি দেন যে, বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির নির্ভরতা থেকে মুক্ত করে একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত জ্বালানি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।