ঢাকা সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রামে ফের অস্থির কাঁচা বাজার

চট্টগ্রামে ফের অস্থির কাঁচা বাজার

চট্টগ্রামে পুরো রমজান মাসজুড়ে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রেতাসাধারণের নাগালে থাকলেও ফের অস্থির হতে শুরু করেছে কাঁচা বাজরগুলো। সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পর ফের অস্থির হয়ে উঠেছে বন্দরনগরীর কাঁচা বাজার। লাফিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। ৮০ টাকা ছাড়িয়েছে পটল, শিম, কচুর লতিসহ ছয় সবজির দাম। ৫০ টাকার কমে মিলছে কেবল আলু, টমেটো আর পাকা মিষ্টি কুমড়ো। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির এমন ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে আর ঈদে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় বাড়ছে দাম। তবে ভোক্তা অধিকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজানের মতো তদারক সংস্থাগুলোর কড়া তদারকি না থাকায় দাম বাড়ছে সবজির। দৌরাত্ম্য বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদেরও। অন্যদিকে, নিষ্ক্রিয়তার কারণ হিসেবে ঈদের ছুটির কথা বলছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। গতকাল নগরীর অক্সিজেন, দুই নম্বর গেট, চকবাজার, কাজীর দেউড়ি, আতুরার ডিপো, কর্ণফুলী কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিম ছাড়া অন্য কোন শীতের সবজি নেই বাজারে। ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে সবজিটি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলা পঞ্জিকার হিসেবে বসন্ত শেষ না হলেও বাজারে এসেছে গ্রীষ্মের নানা সবজি। গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে বাজারে দেখা মিলছে কাঁকরোল, পটল, করলা, শসা, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়ো, ঝিঙে, চিচিঙ্গা ইত্যাদি। এর মধ্যে ৮০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁকরোল, পটল, করলা ও ঝিঙে। বাজারে কাঁকরোল ১৫০, পটল ১০০ এবং ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে করলা ও ঝিঙে। অন্যান্য সবজির মধ্যে আলু ২৫, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ৩০, ঢেঁড়স ৬০, বরবটি ৭০, লতি ১০০, বেগুন ৬০-৮০, মিষ্টি কুমড়ো (কাঁচা) ৬০, পাকা মিষ্টি কুমড়ো ৩০, পেঁপে ৬০, লাউ ৫০ এবং চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, পেঁয়াজেরও দাম বেড়েছে ঈদের পর। সপ্তাহের ব্যবধানে জাতভেদে ৫-১৫ টাকা বেড়েছে পণ্যটির দাম। মেহেরপুরী পেঁয়াজ ৩০ ও বারি পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। অপরিবর্তিত রয়েছে রসুনের দাম। ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি। সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহদ্দারহাট এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, শীতকালীন সবজি এখন নেই। তাই দাম বেড়েছে। গ্রীষ্মকালীন সবজিও পুরোপুরি আসেনি বাজারে। তাই আগাম যা এসেছে একটু দাম বেশি। তাছাড়া ঈদের বন্ধে পরিবহনেও একটু সমস্যা হয়েছে। তার প্রভাবও পড়েছে। তবে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইনের দাবি, ঈদের পর তদারক সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দৌরাত্ম্য বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদেরও। তিনি বলেন, রমজানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাজার তদারক সংস্থাগুলো যেভাবে সক্রিয় ছিল এখন আর সেরকম নেই। তাদের নিষ্কিয়তার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া ব্যবসায়ীদেরও সচেতন হওয়ার বিষয় আছে। চোর-পুলিশ খেলে তো বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এখন আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে, তাদের ঠেকাতে কৃষকদের সরাসরি পণ্য বাজারজাতকরণের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, নানা কারণে সবজির দাম বাড়ছে। ঈদের ছুটিতে একটু সমস্যা হয়েছে।

প্রতিদিন অভিযান চলছে, কাঁচা বাজারেও আমাদের নজর আছে। অন্যায়ভাবে কেউ বাজার অস্থিতিশীল করলে ব্যবস্থা নেবো। অন্যদিকে, কিছুটা কমেছে মাছের দামও। ২০-৪০ টাকা কমে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া ও পাঙাশ। ২০ টাকা কমে মাঝারি আকারের কাতল ২৮০, রুই ২৭০ এবং মৃগেল ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। তবে ২০ টাকা দাম বেড়েছে দেশি মুরগির। নগরে ব্রয়লার ১৯৫, সোনালি ৩০০-৩৩০ এবং দেশি মুরগি ৬২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।ষ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত