বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের অপেক্ষার অবসান হয়নি, রহস্য এখনও অমীমাংসিত। সিলেট বিএনপি এখনও ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায়, এই মর্মান্তিক বাস্তবতার কথা তুলে ধরেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। গতকাল দুপুরে সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন সরকারের নানা আশ্বাস সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ইলিয়াস আলীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এখনও জীবিত এবং সংশ্লিষ্ট মহল তার অবস্থান সম্পর্কে অবগত।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিলেটবাসীর হৃদয়ের নেতা ইলিয়াস আলীর খোঁজ না পাওয়া আমাদের জন্য গভীর বেদনা ও ক্ষোভের বিষয়। এটি একটি জাতির জন্য চরম লজ্জার। আমরা ন্যায়বিচারের আশায় আজও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাই।’ সম্প্রতি কথিত ‘আয়নাঘর’ থেকে গুম হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি ফিরে আসার প্রসঙ্গ টেনে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো ইলিয়াস আলী গুমের প্রসঙ্গকে নতুন করে সামনে এনেছে। একইভাবে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার ও জুনেদ আহমদের ক্ষেত্রেও তাদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘অতীতে যেসব ভুলের কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছিল, বর্তমান সরকার যেন সে ভুলগুলো না করে। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। জনগণ আজ যেসব অপকর্ম দেখে ক্ষুব্ধ, সেগুলো পরিহার করে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।’ তারা আরও বলেন, ‘গুমের ঘটনাগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলছে দেশকে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন একান্ত প্রয়োজন।’ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক পিপি, সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন লস্কর, সামিয়া বেগম চৌধুরী, গৌছ আলী, লিলু মিয়া, অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান সুয়েব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, তাজরুল ইসলাম তাজুল, আনোয়ার হোসেন মানিক, কোহিনুর আহমদ, আবুল কাশেম, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ ও অ্যাডভোকেট আল আসলাম মুমিন, লোকমান আহমদ, অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম চৌধুরী, তাসনিম শারমিন তামান্না, আল মামুন খান, মাহবুব আলমসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যাতে ইলিয়াস আলীসহ সব গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানানো হয়।