ঢাকা রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ডিজিটাল ফ্যাক্ট চেকিং প্রশিক্ষণ শেষ করলেন জনসংযোগ কর্মকর্তারা

ডিজিটাল ফ্যাক্ট চেকিং প্রশিক্ষণ শেষ করলেন জনসংযোগ কর্মকর্তারা

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত দুদিনব্যাপী ডিজিটাল ভেরিফিকেশন অ্যান্ড ফ্যাক্ট চেকিং প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। গত বুধবার আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে প্রশিক্ষণের সমাপ্তি ঘোষণা করেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। সমাপনী বক্তব্যে সচিব বলেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগে ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা সরকারের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জনসংযোগ কর্মকর্তারা যদি তথ্য যাচাইয়ের দক্ষতা অর্জন করেন তাহলে তারা সরকারের প্রকৃত বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।

এরআগে গতকাল মঙ্গলবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রচুর অপতথ্য ছড়াচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাইবার যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে। এখন ভুল তথ্য, মিথ্যা তথ্য এবং সাইবার যুদ্ধ অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বর্তমানে সাইবার স্পেসে যে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাবে। এ ব্যাপকতা প্রতিরোধে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে মিথ্যা তথ্য দেশের সামাজিক সৌহার্দ্য নষ্ট করে তাই এ বিষয়টিকে ছোট করে দেখা বা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ। ভুল তথ্য এবং মিথ্যা তথ্য চেক করতে আমাদের লাগবে ফ্যাক্টস এন্ড ফিগার। এই ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার অথেনটিক কি না তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত উপ-প্রধান তথ্য অফিসার একেএম কামরুল আহছান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রশিক্ষণ খুবই সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রশিক্ষণের ফলে জনসংযোগ কর্মকর্তাদের দক্ষতা আরও শানিত হবে। আমরা প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশ, সরকার এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে অপতথ্য, অপপ্রচার কার্যকরভাবে খণ্ডন করতে সক্ষম হবো। এতে একদিক যেমন গুজব প্রতিরোধ করা যাবে, অন্যদিকে দেশ ও সরকারের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার) মো. ফয়সল হাসান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াসহ মূল ধারার বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে যেমন তথ্যের অবাধ প্রবাহ ঘটছে, তেমনি বিভিন্নভাবে ভুল তথ্য, অপতথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে তা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত যেভাবেই হোক না কেন। সেজন্য জনগণের নিকট সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে যে কোনো তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতকরণ বা ফ্যাক্ট চেকিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা ফ্যাক্ট চেকিংয়ের জন্য বিভিন্ন অনলাইন/ডিজিটাল ট্যুল (সফটওয়্যার ও ওয়েবসাইট) সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কীভাবে ফ্যাক্ট চেকিং করতে হয়, হাতেকলমে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেছি। প্রশিক্ষণটি আমাদের কর্মক্ষেত্রে বেশ কাজে লাগবে বলে মনে করি। এ প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য আইসিটি ডিভিশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপ-প্রধান তথ্য অফিসার) দীপংকর বর বলেন, প্রশিক্ষণে ডিজিটাল কনটেন্ট যাচাই, ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স টুলস ব্যবহারের পদ্ধতি এবং ডিজইনফরমেশন মোকাবিলার বাস্তব কৌশল শেখানো হয়। ভবিষ্যতে ডিপফেক শনাক্তকরণ, এআই কনটেন্ট চিহ্নিতকরণসহ আরও সময়োপযোগী মডিউল ও নিয়মিত রিফ্রেশার কোর্স চালু করা হলে জনসংযোগ কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা আরও বাড়বে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (সি. তথ্য অফিসার ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এই প্রশিক্ষণ অপতথ্য, ভুল তথ্য ও গুজব প্রতিরোধ ও শনাক্ত করতে ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত