বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও ফলাফল জালিয়াতির অভিযুক্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদুল ইসলামের কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে নারী লোভি শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে এই ব্যতিক্রমি প্রতিবাদের আয়োজন করা হয়। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকদের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে হাফ প্যান্ট, টিশার্ট ও জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে। কুশপুত্তলিকার গায়ে লেখা আমি নারী লোভি নিপীড়নকারী শিক্ষক। এরপর শিক্ষার্থীরা একে একে কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করছে। এ বিষয়ে বেরোবির এক শিক্ষার্থী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও রেজাল্ট টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আমরা বলব অবিলম্বে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নিপীড়নের যে চর্চা তা বন্ধ করতে যেন বিশেষ সেল গঠন করা হয়, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বেরোবির আর এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দাবি একটাই অপকর্মের সঙ্গে যেসব শিক্ষক জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের যেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যাতে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করতে সাহস না পায়। নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী কথা বলতে চায় না। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন ও ওই বিভাগের এক ছাত্রীর কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপে শোনা যায় ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীকে বলছেন ৩.১৬ রেজাল্ট থেকে ৩.৭০ করে দিয়েছেন এবং শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জিজ্ঞাসা করলে কি বলতে হবে। তিনি ছাত্রীকে বলছেন তুমি প্রথমে চাইছিলা ‘স্যার আমাকে ফাস্ট করে দেন।’ আমি দিতে পারতাম। আজকে কি জবাবটা দিতাম? তিনি আরও বলেন, একদম সাইলেন্ট। ছাত্রী বলেন, আমি চুপচাপ আছি। এছাড়াও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ড. তানজিউল ইসলাম জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়াও অপর শিক্ষক গত ১৯ এপ্রিল পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রারির অভিযোগ ওঠে। তার সঙ্গে মেসেঞ্জারে এক ছাত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়। স্ক্রিনশটে দেখা যায় ওই শিক্ষক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির নানাভাবে চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন অজুহাতে বাড়িতেও ডেকেছেন। ভুক্তভুগী শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, শিক্ষক রশীদুল ইসলাম নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। ম্যাসেঞ্জারে আমার শাড়ি পরা ছবি চেয়েছিলেন নানাভাবে তা এড়িয়ে গিয়েছি। এরপর উনি আমাকে নক দিয়ে ওনার চেম্বারে ডেকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল শুরু করে।