সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেলে নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং কর্মচারীরা বিপাকে। ছয় মাসের নিয়োগ শর্তের বিপরীতে কোম্পানি জনপ্রতি লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের। কারো কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, আবার কেউ কেউ কাজ করলেও কাগজপত্রে তাদের নেওয়া হচ্ছে না স্বাক্ষর। ফলে কোম্পানি নতুন নতুন অজুহাত সৃষ্টি করে বেতন ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। নিয়োগ বাণিজ্যের মূল হোতা বিতর্কিত রুবেল আহমদ, সামছু আহমদ ও জসীম উদ্দিন। বকেয়া বেতন ও চাকরি ফিরে পেতে গতকাল মঙ্গলবার ওসমানী মেডিকেলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা হাসপাতাল প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন। এর আগে হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লাল সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড এর বিরুদ্ধে একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরিচালক সিলেট কার্যালয় থেকে গত ২৪ মার্চ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বারবার একটি নোটিশ পাঠানো হয়। সেই নোটিশে উল্লেখ করা হয় সিলেট জেলার হরিজন সম্প্রদায়ের পক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লালের বিষয়টি আমলে নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগে দুর্নীতিবাজ ‘সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ এর টেন্ডার বাতিল ও হরিজন সম্প্রদায়ের চল্লিশ জন লোকের চাকুরি ফিরে পাওয়ার আবেদন প্রেরণ প্রসংগে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ একমাস অতিবাহিত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন আন্দোলন করেছেন।
সিলেট জেলা হরিজন সম্প্রদায়ের সহ-সভাপতি পান্নু লাল জানিয়েছেন, গালফ ও আল আরাফাহ সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া আমাদের সম্প্রদায়ের ৪০ জন লোককে হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করেন। তখন তারা সবাই সিলেট সিটি কর্পোরেশনে চাকরিতে ছিল। কিন্তু মেডিকেলের পরিছন্নতার স্বার্থে পরিচালক আমাকে বলেন। পরে আমি এই ৪০জন লোককে সিটি থেকে চাকুরি বাদ দিয়ে হাসপাতালে নিয়োগ করি। তাদের নিয়োগের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু সাউদিয়া সিকিউরিটি সার্ভিসের রুবেল ও সামছু আমাদের লোকদের চাকরি থেকে বাতিল করে দিয়েছে। পরে আমি রুবেল ও সামছুর সঙ্গে যোগাযোগ করি তারা আমাকে টাকা দিয়ে নিয়োগ চূড়ান্ত করার কথা বলেন। এরপর আমি ওসমানী মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগযোগ করি। তিনি আমাকে কোনো আশ্বাস না দিয়ে বলেন আমার মেডিকেলের স্টাফদের সুযোগ দিতে পারছি না আর আপনার লোকদের কি ভাবে দিবো? এদিকে ৩০ মার্চ কাষ্টঘরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে নেওয়ার জন্য এসেছিলেন রুবেল আহমদসহ কজন। পরে হরিজন সম্প্রদায়ের তোপেরমুখে পরে তিনি কৌশলে তারা পালিয়ে যান বলে জানান পান্নু লাল।