জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদের ময়মনসিংহের ‘সুন্দর মহল’ বাড়িটিকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নগরের টাউন হল বাড়িটির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। পরে তারা জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান করেন। রওশনের পৈতৃক এ বাড়িটি জাতীয় পার্টির কার্যালয় হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। ৫ অগাস্টের পর রাজনৈতিক কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে ‘কুটুমবাড়ি’ রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। এরপর থেকে বাড়িটি ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্টদের ‘সহচর’ রওশন এরশাদের ‘সুন্দর মহল’কে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা এ ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘গণহত্যায়’ পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে। এখন তারা নিজেদের বাঁচাতে সুশীলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সুশীলতার আড়ালে তারা আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করতে চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নাকিব বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে ময়মনসিংহে যাদের অবদান ছিল, তাদের একটি অংশ আজকে দালাল মহলের সামনে উপস্থিত হয়েছেন। ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যতগুলো বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে, সবগুলোতেই রওশন এরশাদ শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়েছেন। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।’
সংগঠনটির মহানগর শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ ওলি বলেন, ‘আপনাদের নির্দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চলেছে। এখন আপনারা গর্তে লুকিয়েছেন। গর্ত থেকে আপনারা ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন। ‘তাদের প্রতিহত করার জন্য ছাত্র-জনতা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। এই দেশকে আপনারা চাইলেও আর পেছনে নিয়ে যেতে পারবেন না। ছাত্র-জনতাকে আর কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।’ ‘সুন্দর মহলে’ গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় ও ভেতরে কেয়ারটেকার থাকার বাসাটিও ভাঙা। সামনে দ্বিতীয় তলার বারান্দায় টানানো হয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড। দেয়াল ভাঙার ইটগুলোর পলেস্তারা খুলে পরিষ্কার করা হয়েছে। ‘সুন্দর মহল’ লেখাটি এখনো জ্বলজ্বলে থাকলেও সঙ্গে ভবনের বিভিন্ন অংশে ‘দালাল মহল’ লিখে রেখেছে ছাত্র-জনতা।