প্রাকৃতিক পরিবেশ
আল্লাহর অপার নেয়ামত
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পৃথিবীর সবকিছুই সংঘটিত হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশে। তার নির্দেশেই মানুষের জীবন ধারণের অপরিহার্য উপাদান প্রকৃতি কখনও বিরূপ আচরণ করে থাকে। এর দ্বারা সৃষ্টিজগৎ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীকে মানব বসবাসের উপযোগী করে তৈরি করেছেন। মানব জাতির সব চাহিদা পূরণের যাবতীয় আয়োজন করে তিনি যে উপযুক্ত প্রতিবেশ সাজিয়েছেন, তা হলো আমাদের প্রকৃতি। পরিবেশ বলতে আমরা বুঝি আমাদের চারপাশের অবস্থা। এই পরিমণ্ডলে রয়েছে গাছপালা, নদণ্ডনদী, ফুল-ফল, পশু-পাখিসহ নানান আয়োজন। এগুলো নৈসর্গিক বা প্রাকৃতিক পরিবেশের অংশ। এ ছাড়া মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে খোদার দান প্রকৃতির মধ্যে যে ইতিবাচক কল্যাণকর পরিবর্তন সৃষ্টি করে, তা হলো সামাজিক পরিবেশ। যেমন- রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানা ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে, সামাজিক পরিবেশ বিনির্মাণে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না, যা প্রকৃতিতে বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে।
প্রতিটি প্রাণিকুলেরই ভারসাম্যপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ দরকার। সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবনধারণের জন্য এর বিকল্প নেই। আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে যেমন- গাছপালা, মাটি, পানি, বায়ু, জীবজন্তু, পশুপাখি, রাস্তাঘাট, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, যানবাহন, বাড়ি-ঘর ও কল-কারখানা ইত্যাদি নিয়েই পরিবেশ। কোন পরিবেশে বাস করলে মানুষের সুবিধা হবে বা মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে, ইসলাম তা সুনিশ্চিত করেছে। তাই ইসলাম প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।
আর আমাদের চারপাশে যা কিছু রয়েছে এবং যা প্রাকৃতিক পরিবেশ হিসেবে খ্যাত, এগুলো মহান স্রষ্টার অপার নেয়ামত। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে- ‘আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি ও এতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং আমি পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি। আমি তোমাদের জন্য তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি এবং তোমরা যাদের রিজিকদাতা নও, তাদের জন্যও। প্রতিটি বস্তুর ভাণ্ডার আমার কাছে আছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি। আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ থেকে বারিধারা বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করতে দিই, বস্তুত এর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই। ’ (সুরা হিজর : ১৯-২২)
পৃথিবীতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষায় আল্লাহতায়ালা বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। কোরআনে তিনি এরশাদ করেন, ‘আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং নয়নাভিরাম বিবিধ উদ্ভিদরাজি উৎপন্ন করেছি। এটি আল্লাহর অনুরাগী বান্দাদের জন্য জ্ঞান ও উপদেশস্বরূপ। ’ (সুরা কাফ : ৭-৮)
আল্লাহতায়ালা প্রাকৃতিক পরিবেশকে মানুষের সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক বাসোপযোগী করে অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। তাই তো আমরা দেখি প্রচণ্ড শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোতে যেখানে বছরের প্রায় পুরোটা জুড়ে মাঠ, ঘাট, নদী-নালা সর্বত্রই বরফে ঢাকা থাকে, সেখানেও প্রাকৃতিক উদ্ভিদকুল সবুজের ডানা মেলে এবং বরফ আচ্ছাদিত মৎস্যকুল স্বাভাবিক জীবন পরিচালনের মাধ্যমে স্রষ্টার অপার মহিমার জানান দেয়।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি