হাজারবর্ষী গাছ

রহস্যে ঘেরা এ বিশ্বজগৎ। রহস্যময় পৃথিবীর সব জীববৈচিত্র্য। অনেক জীব রয়েছে, যার আয়ুষ্কাল একেবারেই সীমিত। আবার অনেক জীব রয়েছে, যার সামনে ঘটেছে পৃথিবীর হাজার হাজার বছরের পরিবর্তন। বিশ্বে এমন অনেক গাছ রয়েছে, যার বয়স হাজার হাজার বছর। এখনও তা দিব্যি পৃথিবীতে অক্সিজেন সরবরাহ করে চলেছে। এমনই ৫টি গাছ নিয়ে লিখেছেন- তাবাসসুম মাহমুদ

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

গিঙ্কো বাইলোবা

এটি মেইডেনহেয়ার নামেও পরিচিত। গিঙ্কো গাছ বেঁচে থাকতে পারে এক হাজারেরও বেশি বছর। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই বৃক্ষের দীর্ঘায়ু হওয়ার গোপন কারণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। চীনে এ গাছটি দেখতে পাওয়া যায়। এটি ১ হাজারের বেশি বছর বেঁচে থাকতে পারে। এর দীর্ঘায়ু হওয়ার পেছনে গোপন কী কারণ আছে, বিজ্ঞানীরা সেটি সম্প্রতি খুঁজে বের করেছেন। বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই গাছ এমন কিছু রাসায়নিক উৎপাদন করতে পারে, যা তাদের রোগ-জীবাণু ও খরা থেকে রক্ষা করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বৃক্ষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

গ্রেট বেসিন ব্রিসেলকোন পাইন

ধারণা করা হয়, পৃথিবীতে এখনও যেসব গাছপালা ও পশুপাখি বেঁচে আছে, তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন। সারা বিশ্বে সবচেয়ে বিখ্যাত ব্রিসেলকোন পাইন গাছটির নাম মেথুসেলাহ। ধারণা করা হয়, এই গাছটির বয়স ৪ হাজার ৮০০ বছরেরও বেশি। এর দীর্ঘ জীবনের পেছনে দারুণ একটি বিষয় হচ্ছে, এটি অত্যন্ত বিরূপ ও বৈরি পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এসব গাছের জন্মও হয় সেরকম পরিবেশে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা এবং ইউটার উঁচু উঁচু পর্বতে এই গাছটি জন্মায়। এরা ধীরে ধীরে বড় হয়। এক জায়গায় প্রচুর গাছ থাকে। এর ফলে তারা নিজেদের পচন, নানা রকমের কীটপতঙ্গ ও ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা করতে পারে।

ক্রিপ্টোমেরিয়া

এটি জাপানি সেডার নামেও পরিচিত। চীনের কিছু কিছু এলাকায় এবং দক্ষিণ জাপানে এ গাছগুলো দেখতে পাওয়া যায়। হালকা শীতের আবহাওয়ার মধ্যে এই গাছ জন্মায়। জাপানের এ রকম কিছু কিছু গাছের বয়স ৬৫০ বছরেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। আর চীনে এই প্রজাতিরই কিছু গাছের বয়স প্রায় এক হাজার বছর।

আলেরসা

এটি প্যাটাগোনিয়ান সাইপ্রেস নামেও পরিচিত। চিলি ও আর্জেন্টিনার দক্ষিণাঞ্চলে এই গাছটি খুঁজে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, এই প্রজাতির সবচেয়ে পুরোনো বৃক্ষটির বয়স আনুমানিক ৪ হাজার বছর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গাছটিতে এমন এক ধরনের রস আছে, যা তাদেরকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি পানিতে থাকলেও এই গাছ পচে না।

আফ্রিকান বেওবাব গাছ

এই বৃক্ষ দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি এই প্রজাতির অনেক প্রাচীন গাছ মারা গেছে। বিজ্ঞানীরা এর জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। এই গাছটি নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি এমন ফল দেয়, যাতে কমলার চেয়েও বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এর শেকড় থেকে লাল রং তৈরি করা যায়। এর বাকল দিয়ে ঝুড়ি ও দড়ির মতো নানা রকমের জিনিস তৈরি করা হয়।