ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বেলা ফুরোবার আগে

গোলাম রাজ্জাক কাসেমি
বেলা ফুরোবার আগে

দেখতে দেখতে ফুরিয়ে এলো মাহে রমজানের বরকতপূর্ণ প্রহর। আমরা কী এর যথাযথ মূল্যায়ন করতে পেরেছি! গোনাহ মাফ করাতে পেরেছি! উত্তর যদি না হয়, তাহলে বলব, এখনও সময় আছে গোনাহ মাফের। তওবা করে নিজেকে পাপমুক্ত করার ও আত্মসংশোধনের সুযোগ এখনও বিদ্যমান। তওবা খাঁটি হলে মুহূর্তেই সব মাফ করে দেন আল্লাহতায়ালা। বিগত অবহেলিত দিনগুলোর ক্ষতি কাটিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারি। তবেই হবে সত্যিকারের মুক্তি। মনে রাখতে হবে, সময়ের কাঁটা কারও জন্য অপেক্ষা করে না। পাপ মোচনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তগুলো হারিয়ে যাচ্ছে কর্পূরের মতো। যাপিত জীবনের পাপ মোচনের আগেই যদি রমজানের বেলা ফুরিয়ে যায় হেলায়-খেলায়, তাহলে এ জীবন ব্যর্থ।

মহানবীর ধিক্কার

মাহে রমজান গোনাহ মাফ এবং মাগফিরাত লাভের মধ্য দিয়ে চিরশান্তি ও চিরমুক্তির একটি সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। কিন্তু যে ব্যক্তি এ সুযোগ কাজে না লাগায়, তার ধ্বংস অনিবার্য; তার বিপদ অবশ্যম্ভাবী। যে ব্যক্তি রমজান পেয়েও নিজের পাপ মোচন করাতে পারল না, মহানবী (সা.) তাকে ধিক্কার দিয়ে বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক, যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল, অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি।’ (আদাবুল মুফরাদ : ৫০২)। নবীজি (সা.) যার জন্য ধ্বংসের দোয়া করেছেন, তার ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। তাই আমাদের সতর্ক হওয়া জরুরি।

আল্লাহভীতির মূলকথা

রমজান শেষ হওয়ার আগেই ভেবে দেখা দরকার, আত্মশুদ্ধি অর্জনে আমরা নিজেদের কতটুকু পরিপূর্ণ করতে পেরেছি। আল্লাহতায়ালা রমজান মাসে সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছেন, ‘হে মোমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীতি) অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)। আর আল্লাহভীতির মূলকথা হলো, গোনাহ ও পাপ থেকে বেঁচে থাকা। এ জন্যই রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও তদনুযায়ী আমল করা বর্জন করেনি, তার এই পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বোখারি : ১৯০৩)। অপর এক হাদিসে এসেছে, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা পালনের সারকথা হলো, তৃষ্ণার্ত আর ক্ষুধার্ত থাকা।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৯০)।

ক্ষমার দোয়া পাঠ

মাহে রমজান মাগফিরাত লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ। পবিত্র রমজানে আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করেন এবং পাপ মার্জনা করেন। রোজা অবস্থায় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করা এবং অতীত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না- ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. রোজাদার, যতক্ষণ না সে ইফতার করে, ৩. মজলুম ব্যক্তির দোয়া।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৭৫২)। তাই উঠতে-বসতে সর্বাবস্থায় আমরা এ দোয়া পাঠ করা চাই, ‘আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি যামবিও ওয়া আতুবু ইলাইহি। (অর্থ : আমি আমার রব আল্লাহর কাছে আমার সব পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করছি)।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত