আত্মরক্ষায় সুরা নাস ও ফালাক

আবুল হাসান মুহাম্মাদ নোমান

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

রাসুল (সা.) একবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। তিনি নিদ্রা অবস্থায় দেখতে পান, দু’জন ফেরেশতা তার কাছে আসেন। একজন তার শিরোদেশে, অন্যজন তার পাদদেশে দাঁড়িয়ে পরস্পর কথোপকথন করছেন। শিরোদেশের ফেরেশতা পাদদেশের ফেরেশতার কাছে জিজ্ঞেস করেন, ‘রাসুল (সা.)-এর রোগ সম্পর্কে তোমার ধারণা কী?’ তিনি বললেন, ‘রাসুল (সা.) জাদুতে আক্রান্ত হয়েছেন।’ ফেরেশতা জিজ্ঞেস করেন, ‘জাদু কে করেছে এবং সে জাদুটি কোথায়?’ ফেরেশতা বললেন, ‘লোবায়েদ বিন আসম ইহুদি এবং তা জারযান নামক কূপে একটি খেজুরের খোসার আবরণে পাথরের নিচে চাপা রয়েছে। এখন তা নষ্ট করার পদ্ধতি হচ্ছে, ওই কূপের পানি ফেলে পাথরের নিচ থেকে খেজুরের খোসার আবরণটি বের করে জ্বালিয়ে দিতে হবে।’

রাসুল (সা.) এ কথা শুনে ভোরবেলা আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা.)-কে কয়েকজন সাহাবিসহ কুয়ার কাছে পাঠালেন। তারা কুয়ার পানি তুলে ফেললেন। এর পর পাথর তুলে খেজুরের খোসাটি বের করে যখন জ্বালিয়ে দিলেন, তখন দেখলেন, তাতে একটি সুতায় এগারোটি গিরা দেয়া রয়েছে। যখন এগারোটি আয়াত (সুরা ফালাকের ৫টি আয়াত ও সুরা নাসের ৬টি আয়াত) পাঠ করা হলো, গিরা এগারোটিও খুলে গেল। (আসবাবুন নুজুল)।

সুরা ফালাক মক্কায় অবতীর্ণ। এর একটি রুকু, ৫টি আয়াত। ফালাক শব্দের অর্থ- ঊষা বা প্রভাত। সুরা ফালাকের অর্থ হলো- হে নবী! আপনি বলুন, আমি আশ্রয় চাচ্ছি প্রভাতের স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অপকার থেকে, রাতের আচ্ছন্ন আঁধারের অপকার থেকে, আর (জাদু পাঠ করে) গিরাগুলো ফুঁ প্রদানকারীদের অপকার থেকে আর হিংসুকের অপকার থেকে, যখন সে হিংসা করে।

সুরা নাস মক্কায় অবতীর্ণ। এর একটি রুকু, ৬টি আয়াত। নাস শব্দের অর্থ- মানব বা মানবজাতি। সুরা নাসের অর্থ হলো- হে নবী! আপনি বলুন, আমি মানুষের প্রতিপালকের কাছে আশ্রয় চাই, যিনি মানুষের বাদশা, মাবুদ। আশ্রয় চাই লুকিয়ে থাকা শয়তানের কুমন্ত্রণার অপকার হতে, জিন ও মানুষের মধ্য হতে যে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, বাইতুল মাওলা জামে মসজিদ, কাঁঠালবাগান, ঢাকা