চারিদিকে হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মৃত্যুবরণকারীদের সংখ্যাও কম নয়। প্রতি বছর বর্ষার সময়টাতে বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। জমে থাকা নোংরা পানিতে জন্ম নেয় এডিস মশা। এর কামড়ে হয় ডেঙ্গু জ্বর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকেই ঘরবাড়ি, আঙিনা, ড্রেন পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সতর্ক করে আসছেন। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে টিভি চ্যানেল, পত্রপত্রিকায় প্রচারণাও কম হয়নি। কিন্তু সে অনুযায়ী আমাদের সচেতনতা বেড়েছে কতটুকু, তা আশপাশে তাকালেই বোঝা যায়। দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত, গ্রাম থেকে শহর- সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে এ মহামারি। এটাকে শুধু ‘আল্লাহর পরীক্ষা; যে আল্লাহ দিয়েছেন, তিনিই রক্ষা করবেন’ বললেই কি পার পাব নাকি আমাদের অসচেতনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা এ ক্ষেত্রে শতভাগ দায়ী?
পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ: পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাকে আমরা শুধু সামাজিক কাজ ভেবে এড়িয়ে যাই। পাশাপাশি এটা যে আমাদের ধর্মীয় দায়িত্বও, তা স্মরণে রাখি না। নামাজ, রোজা, জিকির-আজকার যেমন সওয়াবের কাজ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও তেমন সওয়াবের কাজ। আমাদের অসচেতনতা বা স্বেচ্ছাচারিতার ফলে যদি পরিবেশ দূষিত হয়, রোগ-জীবাণু ছড়ায়, বনি আদম কষ্ট পায়, তবে আমাদের কবিরা গোনাহ হবে। আর এমন একটা কবিরা গোনাহও জাহান্নামের আগুনে পোড়ার জন্য যথেষ্ট। রাসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।’ (মুসলিম:২২৩)। পবিত্রতা ব্যাপক অর্থ বহনকারী শব্দ। যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অর্থও রয়েছে। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে পরিচ্ছন্নতার কী গুরুত্ব! তাই তো নবীজি (সা.) একে ঈমানের অংশ বলেছেন।
আঙিনা পরিচ্ছন্নের ব্যাপারে নির্দেশনা: অন্য হাদিসে বাড়ির আঙিনা পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে। নবীজি (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্রতাকে ভালোবাসেন। আল্লাহ পরিচ্ছন্ন, তিনি পরিছন্নতাকে ভালোবাসেন।’ এ হাদিসের শেষে নবীজি (সা.) বলেন, ‘অতএব, তোমরা তোমাদের উঠোনগুলো পরিচ্ছন্ন রাখবে।’ (তিরমিজি:২৭৯৯)। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। লিখিত হয়েছে শত শত গ্রন্থ। ফিকহের কিতাবগুলোতে এ বিষয়ে লিখিত হয়েছে হাজার হাজার পৃষ্ঠা। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সচেতনতা জরুরি। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, সুস্থ সমাজ গঠনে অবদান রাখা চাই।