প্রশ্ন: একদিন ফজর নামাজে প্রথম রাকাতে ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলাম। ইমাম কখন রুকুণ্ডসেজদা করলেন, টের পাইনি। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি, তিনি সেজদা থেকে উঠে দ্বিতীয় রাকাত শুরু করেছেন। তখন আমি তার সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাতে শরিক হয়ে নামাজ শেষে ছুটে যাওয়া রাকাতটি আদায় করেছি। আমার ওই নামাজ আদায় হয়েছে নাকি তা পুনরায় পড়তে হবে?
উত্তর: আপনার ওই নামাজ আদায় হয়ে গেছে, তা পুনরায় পড়তে হবে না। তবে তা নিয়মসম্মত হয়নি। কারণ, নামাজের শুরু থেকে উপস্থিত থাকার পর ঘুমের কারণে কিছু অংশ ছুটে গেলে নিয়ম হলো, যে অংশ ছুটে গেছে, তা আগে আদায় করে নেওয়া, তারপর ইমামের অনুসরণ করা। (আল মুহিতুল বোরহানি : ২/৩৪৭, বাদায়েউস সানায়ে : ১/৫৬৩, আল বাহরুর রায়েক : ১/৩৫৬)।
প্রশ্ন: দুই সুরার মাঝে একটি মাত্র সুরার ব্যবধান রাখার হুকুম কেমন? যেমন- কেউ প্রথম রাকাতে সুরা লাহাব এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফালাক পড়ল। মাঝখানে মাত্র সুরা ইখলাসের ব্যবধান রাখল। এভাবে কেরাত পড়লে কি নামাজ মাকরুহ হবে?
উত্তর : ফরজ নামাজে প্রথম রাকাতে এক সুরা পড়ে ইচ্ছাকৃত মাঝে একটি ছোট সুরা রেখে দিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে পরবর্তী সুরা পড়া অনুত্তম। আর অনিচ্ছাকৃত হলে অনুত্তম হবে না। উল্লেখ্য, এ হুকুম শুধু ফরজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নফল নামাজে এমন হলে কোনো অসুবিধা নেই। (খোলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৯৭, ফাতহুল কাদির : ১/২৯৯, আল বাহরুর রায়েক : ২/৩২, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৭৮, আদ্দুররুল মুখতার : ১/৫৪৬-৫৪৭)।
প্রশ্ন : কোনো সময় তাহাজ্জুদের নামাজ এক রাকাত পড়ার পর সুবহে সাদিক হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? নামাজ ছেড়ে দেয়া নাকি দ্বিতীয় রাকাত পড়ে দুই রাকাত পূর্ণ করা?
উত্তর : তাহাজ্জুদ পড়ার মতো সময় আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার পরই নামাজ শুরু করা উচিত। কখনো তাহাজ্জুদ শুরু করার পর নামাজ অবস্থাতেই সুবহে সাদিক হয়ে গেলে নামাজ পূর্ণ করে নেবে। তবে এ দু’রাকাতকে ফজরের সুন্নত গণ্য করা যাবে না। ফজরের সুন্নত পৃথকভাবেই আদায় করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫২-৫৩, হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকিল ফালাহ : ১০১, ফাতহুল কাদির : ১/২০৯, আল বাহরুর রায়েক : ১/২৫৩, রদ্দুল মুহতার : ১/৩৭৪)।