পরিবেশবান্ধব সৃষ্টি

তাবাসসুম মাহমুদ

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

মহান আল্লাহ এ বসুন্ধরাকে সাজিয়েছেন অপরূপ নৈপুণ্যে। সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছেন নান্দনিক সৌন্দর্যের মনকাড়া নিদর্শন। তিনি নিখিল বিশ্বে অসংখ্য মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে, তৈরি করেছেন নিজস্ব ব্যঞ্জনায়। রূপসী দৃশ্যে চোখ জুড়ানোর জন্য প্রকৃতিকে সাজিয়েছেন সবুজ শ্যামলিমায়। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য গাছপালা, তরুলতা এবং উদ্ভিদ দিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছেন সুনিপুণভাবে। রং-বেরঙের ফুলের মোহনীয় সুবাসে আমোদিত করে রেখেছেন পুষ্পবিথী।

মিষ্টতার আস্বাদনে হৃদয়-মন ভরিয়ে দিতে রেণুর মাঝে সৃষ্টি করেছেন মধুর বিন্দু। আরোগ্যময় স্বাস্থ্যকর মধু সরবরাহে ফুলের মিলনমেলায় পাঠান রসিক ভ্রমর। খাবারের প্রয়োজন মেটাতে, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং বিষণ্ণ মনে আনন্দের দোলা দিতে সৃজন করেছেন অসংখ্য পশুপাখি। যেন বান্দা আবেগাপ্লুত হয়ে কৃতজ্ঞ মনে লুটিয়ে পড়ে সেজদায়। জবানে সৃষ্টি হয় ‘আলহামদুলিল্লাহ’র সুমধুর গুঞ্জন। অবচেতন মনে বেজে ওঠে ‘আল্লাহু আকবার’-এর প্রাণময় ধ্বনি। এভাবে করুণাময় রব পৃথিবীর দৃশ্য-অদৃশ্য সবকিছু আমাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন তার নিরঙ্কুশ কুদরতে। লাগিয়ে রেখেছেন আমাদের উপকারে অহর্নিশ। যাতে এসব নেয়ামতের বারিধারায় সিক্ত হয়ে প্রকৃত দাতাকে ভুলে না যাই আমরা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সেসবকে তাঁর তরফ থেকে তোমাদের উপকারে লাগিয়ে দিয়েছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা জাসিয়া : ১৩)।

আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। হাঁস-মুরগি ও ডিম বিক্রি করে একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, তেমনি তা আহার করে শরীরে আমিষের অভাবও অনেকাংশে পূরণ করা যায়। কেননা, হাঁস-মুরগির ডিম ও গোশত প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। হাঁসের বিষ্ঠা ভালোমানের জৈব সারও বটে। তা ছাড়া মুক্ত অবস্থায় পালন করলে হাঁস-মুরগিকে তেমন বেশি খাদ্য দেয়ার প্রয়োজন হয় না। হাওর-বিল, ডোবা-নালা ও ধানের জমিতে নিজেরা চরিয়ে খেতে পারে। ফলে প্রাকৃতিক খাবারের অভাব হয় না তাদের। বিচিত্র সব প্রাণী দয়াময় রব সৃষ্টি করেছেন আমাদের বহুবিধ কল্যাণার্থেই। কোরআনুল কারিমে তিনি এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ এক পানি থেকেই সব বিচরণকারী জীব সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর ওদের মধ্যে কতক এমন, যা নিজের পেটের ওপর ভর দিয়ে চলে, কতক এমন, যা দুই পায়ের ওপর চলে; আর কতক এমন, যা চলে চার পায়ের ওপর। আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন; নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়ে অবগত।’ (সুরা নুর : ৪৫)।