মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

সহকারী মুফতি, মারকাজুশ শাইখ আরশাদ আল মাদানি, মানিকনগর, ঢাকা

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

প্রশ্ন : নারীদের জন্য পাতলা এবং টাইট জামা পরিধান করার হুকুম কী? কোনো মেয়েকে তার পিতামাতা এবং স্বামী যদি এসব পোশাক কিনে দেয়, তবে তারা গোনাহগার হবে?

উত্তর : যে পাতলা ও আঁটশাট কাপড় পরিধান করলে মেয়েদের শরীরের ভাঁজ প্রকাশিত হয়, তা পরিধান করা নাজায়েজ। হাদিসে এসব কাপড় পরিধান করার ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। যারা এসব কাপড় ক্রয় করে এবং কিনতে উৎসাহ দেয়, তারাও এর গোনাহের ভাগিদার হবে। (সুরা মায়িদা : ২, মুসলিম : ২১২৮)।

প্রশ্ন : কোনো নারী যদি এতো পাতলা ওড়না পরে নামাজ পড়ে যে, ওড়না পরার পরও মাথার চুল স্পষ্ট দেখা যায়; তাহলে তার নামাজ হবে?

উত্তর : নামাজের ভেতর নারীদের মাথা ও চুল ঢেকে রাখা ফরজ। তাই ওড়না এমন মোটা হতে হবে, যা মাথায় দিলে চুল দেখা যায় না। ওড়না যদি এত পাতলা হয়, যা পরার পরও চুল স্পষ্ট দেখা যায়, তাহলে তা মাথায় দিয়ে নামাজ সহিহ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/৫১৪-৫১৫, তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/২৫২-২৫৩, আল বাহরুর রায়েক : ১/২৬৮, খোলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৭৩)।

প্রশ্ন : চুল রঙ করার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী?

উত্তর : মেয়েদের জন্য সব ধরনের সাজসজ্জা গ্রহণ করা জায়েজ, যদি তা কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে না হয় অথবা শরিয়তে নিষিদ্ধ সাজ না হয়। আর স্বামীকে খুশি করার জন্য চুলে মেহেদি দেয়া বা কালো ছাড়া অন্য রং করা নারীদের জন্য জায়েজ। তবে পরপুরুষকে দেখানোর জন্য হলে নাজায়েজ। (বাজলুল মাজহুদ : ৫/৮)।

প্রশ্ন : নামাজের সময় চোখ খোলা রাখলে আমার দৃষ্টি এদিক-ওদিক চলে যায়। তাই মনোযোগ ধরে রাখার জন্য চোখ বন্ধ করে নামাজ আদায় করা যাবে?

উত্তর : নামাজে চোখ খোলা রাখা এবং দাঁড়ানো অবস্থায় সেজদার স্থানে দৃষ্টি রাখা সুন্নত। নামাজে অধিকাংশ সময় চোখ বন্ধ রাখা সুন্নতের খেলাফ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়ানো অবস্থায় সেজদার স্থানে দৃষ্টি রাখতেন।

(তাফসিরে তাবারি : ৯/১৯৭)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়ায়, সে যেন চোখ বন্ধ না রাখে। (আল মুজামুল কাবির : ১০৯৫৬, ইলাউস সুনান : ৫/১২১)। সুতরাং চোখ খুলেই নামাজ পড়তে হবে এবং দৃষ্টিকে সেজদার স্থানে রাখার চেষ্টা করতে হবে। অবশ্য কারো অবস্থা যদি এমন হয় যে, নামাজে তার দৃষ্টি খুব বেশি এদিক-সেদিক চলে যায়, তাহলে সে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা পর্যন্ত মাঝেমধ্যে চোখ বন্ধ রাখতে পারবে। ইবনে সিরিন (রহ.) বলেন, নামাজে যার চোখ বেশি এদিক-সেদিক চলে যায়, তাকে চোখ বন্ধ রাখার অনুমতি দেওয়া হতো। (মুসান্নাফে আবদির রাজ্জাক : ৩৩৩০)। তবে ধীরে ধীরে চোখ খোলা রেখে একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/৫০৭, তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/৪১১, হালবাতুল মুজাল্লি : ২/২৫৪)।