ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

সহকারী মুফতি, শাইখ আরশাদ আল মাদানি, মানিকনগর, ঢাকা
মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

প্রশ্ন : ওয়াইফাই ভাড়া দিয়ে টাকা উপার্জন করা যাবে?

উত্তর : ইন্টারনেট কানেকশন একটি পণ্যের মতো; যা নির্দিষ্ট মূল্য দিয়ে ক্রয়ের মাধ্যমে ব্যক্তি মালিক হয়। মালিকানা প্রাপ্ত হওয়ার পর মালিক তা ব্যবহারও করতে পারে, বিক্রিও করে দিতে পারে কিংবা ভাড়াও দিতে পারে। সে হিসেবে ওয়াইফাই সুবিধা দিয়ে টাকা আয় করাও বৈধ হবে। (তাফসিরে বায়যাবি : ১/৭)।

প্রশ্ন : কারও আনলিমিটেড নেট লাইন হ্যাক করে ব্যবহার করা জায়েজ হবে?

উত্তর : কারও মালিকানাধীন বস্তু তার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা জায়েজ নয়। সুতরাং কারও ইন্টারনেট লাইন আনলিমিটেড হলেও তার অনুমতি ছাড়া তা চুরি করে ব্যবহার করা অবৈধ। (মুসনাদে আহমদ : ২০৬৯৫, সুনানে দারেমি : ২৮৮৬)।

প্রশ্ন : ভিডিও গেমস খেলার হুকুম কী?

উত্তর : ইসলামি শরিয়তে খেলাধুলা কয়েকটি শর্তে জায়েজ। যথা- ১. যে খেলা খেলা হবে, তা কাফের ও মুশরিকদের প্রতীক না হওয়া। ২. খেলায় হারজিতের বাজি না থাকা। ৩. খেলায় মগ্নতার কারণে নামাজ-রোজা, ইবাদত বা হালাল রুজি রোজগারে ক্ষতি না হওয়া। ৪. খেলায় শরিয়ত গর্হিত কোনো বিষয় না থাকা। ৫. খেলায় শারীরিক বা মানসিক কোনো উপকারিতা থাকা। কিন্তু ভিডিও গেম খেলার মাঝে অহেতুক সময় নষ্ট করা ছাড়া মৌলিক কোনো ফায়দা নেই। তা ছাড়া ভিডিও গেমের মাঝে নারীদের অশ্লীল ছবিও সংযোজিত থাকে। তাই ভিডিও গেম খেলা জায়েজ হবে না। যদি উপরিউক্ত বিষয়গুলো না থাকে, তবু অহেতুক সময় নষ্টের কারণে অপছন্দনীয়। (ফতোয়ায়ে শামি : ৯/৫৬৫, তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম : ৪/৪৩৬)।

প্রশ্ন : জনৈক ব্যক্তির ওপর গোসল ফরজ হয়েছে। এখন সে শুধু অজু করে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত বা স্পর্শ করতে পারবে?

উত্তর : না, গোসল ফরজ হয়েছে, এমন কারও জন্য গোসল করে পবিত্র না হয়ে কোরআন শরিফ স্পর্শ করা বা তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৭৩)।

প্রশ্ন : গোশতের ব্যাগ ভিজে কিছু রক্ত কাপড়ে লেগে গেছে। ওই কাপড়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে?

উত্তর : প্রবাহিত রক্ত বের হওয়ার পর গোশতের সঙ্গে লেগে থাকা রক্ত নাপাক নয়। তাই প্রশ্নোক্ত কাপড় নাপাক হয়নি। ওই কাপড়ে আদায়কৃত নামাজ সহিহ হবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ১/১০১)।

প্রশ্ন : সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা হওয়ার পর যে ঋতুস্রাব বের হয়, তা কি নেফাসের রক্ত হিসেবে গণ্য?

উত্তর : সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব হওয়ার পর জরায়ু থেকে রক্ত বেরুলে তা নেফাস বলে গণ্য হবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ১/১৮৮)।

প্রশ্ন : নামাজের জন্য অজু করার পর মাথা মুণ্ডালে পুনরায় মাথা মাসেহ করতে হবে?

উত্তর : না। (আল মুহিতুল বোরহানি : ১/৩৩)।

প্রশ্ন : খরগোশের গোশত খাওয়া যাবে?

উত্তর : খরগোশের গোশত হালাল। খেতে সমস্যা নেই। (তিরমিজি : ১৭৮৯, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৮/২৪২)।

প্রশ্ন : কোনো হিন্দু লোক সালাম দিলে তার জবাব দেওয়া যাবে?

উত্তর : হ্যাঁ, যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু ‘ওয়া আলাইকা’ বলতে হবে। (বোখারি : ৬২৫৭, ফতোয়ায়ে কাজিখান : ৩/৩০৭)।

প্রশ্ন : শাশুড়ির মৃত্যুর পর শ্বশুর দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এখন এই সৎ শাশুড়ির সঙ্গে পর্দা রক্ষা করতে হবে?

উত্তর : হ্যাঁ, সৎ শাশুড়ির সঙ্গে পর্দা করা জরুরি। (মাজমাউল আনহুর : ১/৪৮০)।

প্রশ্ন : ছেলে-মেয়ে এক হয়ে শুধু আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করলে কি বিয়ে হয়ে যাবে?

উত্তর : না, হবে না। বরং বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য সাক্ষী হিসেবে কমপক্ষে দু’জন পুরুষ কিংবা একজন পুরুষ ও দু’জন নারীর উপস্থিতি জরুরি। তাদেরকে শুনিয়ে ইজাব-কবুল করা ছাড়া বিয়ে হয় না। (খোলাসাতুল ফাতাওয়া : ২/১৫)।

প্রশ্ন : একটি মেয়ে শৈশবে তার দাদির দুধ পান করেছে। বড় হওয়ার পর তার ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের কথাবার্তা চলছে। তাদের বিয়ে শুদ্ধ হবে?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ছেলেটি মেয়েটির দুধবোনের ছেলে। তাই উভয়ের মধ্যে বিয়ে শুদ্ধ হবে না। (সুরা নিসা : ২৩, তিরমিজি : ১১৪৬, আদ্দুররুল মুখতার : ৩/২১৭)।

প্রশ্ন : বিয়েতে কনের কাছ থেকে ইজন (অনুমতি) নেওয়ার সময় সাক্ষী রাখা কি জরুরি?

উত্তর : না, ইজন নেওয়ার সময় সাক্ষী রাখা আবশ্যক নয়। তবে কনের মাহরামদের মধ্যে কেউ সাক্ষী থাকা ভালো। (আল বাহরুর রায়েক : ৩/১৫৮)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত