আল্লাহতায়ালা মানুষের জাগতিক জীবন সুন্দর, স্বার্থক ও পূর্ণাঙ্গ করতে সৃষ্টি করেছেন এ বিশ্বচরাচরের সবকিছু। মানুষ তাঁর সব নেয়ামত ভোগ করে একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে; পার্থিব নেয়ামতকে কাজে লাগিয়ে পরকালের অনন্ত জীবনের সুখ সন্ধান করবে, এটাই তাঁর লক্ষ্য। আল্লাহতায়ালার অসংখ্য অগণিত সৃষ্টিকুলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমুদ্র। সমুদ্র আল্লাহর এমন এক বৃহৎ ও বিস্ময়কর সৃষ্টি, যাতে রয়েছে মানুষের জন্য জানা-অজানা নানা অফুরন্ত কল্যাণের ভাণ্ডার। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকেই মানুষের নিরন্তর কৌতূহল জাগিয়ে রেখেছে সমুদ্র। চলছে সমুদ্র নিয়ে মানুষের বিরামহীন গবেষণা ও অনুসন্ধান। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে সমুদ্রগর্ভের নানা রহস্যজাল। সমুদ্র নিয়ে মানুষ যত জানছে, যত গবেষণা করছে, নিত্য-নতুন চমকপ্রদ সব তথ্য আবিষ্কৃত হচ্ছে। আল্লাহতায়ালা সমুদ্রে মানুষের জন্য পানি, লবণ, মাছ, গ্যাসসহ যে বহুবিধ খনিজ সম্পদের অফুরান কল্যাণের ভাণ্ডার সুপ্ত রেখেছেন, তা গবেষণা ও আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষ দিন দিন উপকৃত হচ্ছে। এ জন্যই সমুদ্রকে বলা হয়, মহান স্রষ্টার সৃষ্টির অন্যতম এক মহাবিস্ময়। তাই কল্যাণের ধর্ম ইসলামে সমুদ্র নিয়েও চিন্তা-গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের বহু স্থানেও আলোচনা এসেছে সমুদ্রে নিহিত নেয়ামতরাজির বিভিন্ন দিক নিয়ে। যেমন- আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্ঠে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ছাড়া ভূপৃষ্ঠে পতিত না হয়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি করুণাশীল, দয়াবান।’ (সুরা হজ : ৬৫)।
আল কোরআনে সামুদ্রিক মাছ : আল্লাহর সৃষ্টির অপার রহস্যের আধার এ সমুদ্র। সমুদ্রের অন্যতম নেয়ামত হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। পবিত্র কোরআনেও সামুদ্রিক মাছের কথা উল্লেখ করা হয়েছে একাধিক প্রসঙ্গে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই সে সত্তা, যিনি সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পার এবং তা থেকে বের করতে পার অলংকারাদি, যা তোমরা পরিধান কর। আর তুমি তাতে নৌযান দেখবে, তা পানি চিরে চলছে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ করতে পার এবং যাতে তোমরা শোকরিয়া আদায় কর।’ (সুরা নাহল : ১৪)।