ঢাকা ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগ

এম তানজিল আসিফ
সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগ

পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বহির্বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক উন্নতির বিকল্প হিসেবে সমুদ্রের অফুরন্ত সম্পদকে বেছে নিয়েছে। এরই মধ্যে অনেক দেশ তাদের স্বপ্নের বিস্তীর্ণ কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সামান্য পথ বাকি। ঠিক তেমনি আমাদের দেশে বিলম্বে হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের উদ্যোগে ডেল্টা প্লান ২১০০-এর মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। সমুদ্র সম্পদকে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা যার প্রধান লক্ষ্য। আমাদের সমুদ্র সম্পদকে যদি অর্থনৈতিক উন্নতির কাজে ব্যবহার করতে হয়, তবে প্রথমে গবেষণার মাত্রা বাড়াতে হবে। দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমুদ্র সম্পদের উন্নতির জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে গবেষণা শুরু করেছে। ফলে আমাদের নতুন বিষয়ের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। এর জন্য সমুদ্রের পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা চাই। প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি দূষণজাত দ্রব্য ফেলে সমুদ্রের বিশাল অঞ্চলজুড়ে আবর্জনার স্তূপ না করা উচিত।

সমুদ্র সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সবার : বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ ও বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ আইন ২০১৭ অনুসারে সকল মাছকে মাছ হিসেবে অনুমোদন না করে কিছু মাছকে সামুদ্রিক প্রাণী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তিমি, ডলফিন, হাঙর, রে ফিস, অক্টোপাস ইত্যাদি যার অন্যতম।

এসব প্রাণী হত্যা, শিকার, বিক্রি ও খাওয়া আইনত দণ্ডনীয়। আমাদের দেশের জেলেরা প্রতিনিয়ত সমুদ্র হতে এসব প্রাণী শিকার করছে। ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সরকারি অধিদপ্তরগুলোর ব্যর্থতার পরিচয় পাওয়া যায়। আমাদের প্রতিটি মৎস্য বাজার কমিটির পরিবর্তন আনা চাই। এসব কমিটিতে সমুদ্র সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে নিয়োজিত যেকোনো অধিদপ্তরের কোনো অফিসারকে যুক্ত করতে হবে। যেন তিনি সবসময় সমগ্র বিষয় তদারকি করতে পারেন। সমুদ্র সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব কেবল সরকারি অধিদপ্তরের একার নয়, আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিদ্যুৎচালিত যানের ব্যবস্থা : আমাদের জেলেরা মৎস্য শিকারের জন্য যে ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে থাকে, তা সমুদ্র সম্পদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এসব যানবাহন চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় কার্বন উৎপন্নকারী পদার্থ। সমুদ্রে এসব তরল পদার্থ প্রতিনিয়ত মিশ্রিত হচ্ছে। ফলে সমুদ্র দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ দানের পাশাপাশি জেলেদের সরকারিভাবে বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এতে সমুদ্রের কোন প্রাণীকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, আর সমুদ্র সংরক্ষণে করণীয় কী, তা অনায়াসে পালিত হয়ে সমুদ্র সম্পদ রক্ষা পাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত