ভিশনস্প্রিং ও ব্র্যাকের উদ্যোগে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন ২০ লাখ নিকট দৃষ্টিত্রুটির মানুষ

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিত্যজীবন প্রতিবেদক

২০ লাখ নিকট দৃষ্টিরত্রুটির মানুষ তাদের স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। এ কাজটি হয়েছে ভিশনস্প্রিং ও ব্র্যাক হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্রোগ্রামের (এইচএনপিপি) যৌথ উদ্যোগ ও অর্থায়নে পরিচালিত রিডিং গ্লাসেস ফর ইমপ্রুভড লাইভলিহুড (আরজিআইএল) কর্মসূচির আওতায়। এ সাফল্য উদযাপনের লক্ষ্যে ভিশনস্প্রিং ও ব্র্যাক ২৩ জানুয়ারি ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে এ কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মী, কর্মী ও বিতরণকারীদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অফথালমোলজি (এনআইও)-এর পরিচালক ও ন্যাশনাল আই কেয়ারের (এনইসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা, সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও আইএপিবি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কান্ট্রি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, উগান্ডা’র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শক ডা. উপেনথায়ো জর্জ, ভিশনস্প্রিং-এর প্রতিষ্ঠাতা জর্ডান ক্যাসালো এবং ব্র্যাকের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ মুশতাক রাজা চৌধুরী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভিশনস্প্রিং-এর সিইও এলা গুডউইন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ ও ভিশনস্প্রিং-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মিশা মাহজাবীন।

২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করা আরজিআইএল প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল, ব্র্যাকের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রাথমিক চক্ষু সেবা সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করে, মানুষের সেবায় কাজে লাগানো। সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যে যারা নিকট দৃষ্টিরত্রুটির এবং এর ফলাফলে যাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, তাদের চশমা বিতরণের মাধ্যমে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে এ প্রোগ্রাম বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। কার্টিয়ার, ওয়ারবি পার্কার ও ন্যাশনাল ভিশন এর অর্থায়নে এ কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে আশাতীত সাফল্য পাওয়ার প্রেক্ষিতে উগান্ডা ও জাম্বিয়াতেও এখন এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এ প্রোগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিকট দৃষ্টিরত্রুটির (প্রিসবায়োপিয়া) সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের শনাক্ত করতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। শনাক্তদের স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে চশমা বিতরণ করা হয়। চশমা বিতরণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীরা বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা, চিকিৎসার সুযোগ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে স্বল্পআয়ের মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

প্রোগ্রামটি চালু হওয়ার শুরুর দিকে বয়সজনিত নিকট দৃষ্টিরত্রুটির সমস্যা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্য ছাড়া শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা সমাধানের বিষয়টি বিতর্ক তৈরি করেছিল। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ থাকলেও বর্তমানে তিনটি দেশে প্রায় ১০ হাজার স্বাস্থকর্মী ১ কোটি মানুষের চোখ পরীক্ষা করেছেন ও এরমধ্যে নিকট দৃষ্টিরত্রুটির সমস্যায় আক্রান্ত ২০ লাখ মানুষকে চশমা বিতরণের মাধ্যমে প্রোগ্রামটি সফলভাবে পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া জটিল সমস্যায় আক্রান্তদের উচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগ অন্যান্য এনজিও ও সরকার দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের অনলাইন মডিউলে আরজিআইএল মেথডকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।