ঢাকা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ভেষজ চায়ের নানা গুণ

ভেষজ চায়ের নানা গুণ

সকালে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজের সঙ্গে এক কাপ চা না হলে যেন দিনই শুরু হয় না। শুধু সকাল কেনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হোক বা অফিসের মিটিং এক কাপ চা হলে যেন আমেজটাই বদলে দেয়। তবে একেকজন একেক চা পছন্দ করেন। কেউ লিকার চা, আবার কেউ দুধ চা। কেউ আবার বিভিন্ন ফ্লেবারের চা খেতে ভালোবাসেন।

গবেষণায় জানা গিয়েছে, যারা প্রতিদিন চা পান করেন তারা দীর্ঘ সময় ধরে সুস্থ থাকেন। চা শুধু একটি সতেজ পানীয় নয়, এটি বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপকারী। চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। এটিতে কফির চেয়ে কম ক্যাফিন রয়েছে যা ওজন হ্রাসেও আপনাকে সহায়তা করে। এ প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে ৫ রকমের চায়ের সম্পর্কে বলা হয়ছে, যার মাধ্যমে আপনি সর্বদা সুস্থ থাকতে পারবেন।

আদা চা : নিয়মিত আদা দিয়ে যদি চা পান করা যায়, তাহলে আমাদের হার্ট ভালো থাকতে পারে। এছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এ চা। এ চা রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে কোলেস্টেরল কম করে ও রক্ত সঞ্চালন আগের থেকে বৃদ্ধি করে। আদা অর্থাৎ জিনজার, যার অল্প একটু গুনে বেড়ে যায় রান্নার স্বাদ। সর্দি-কাশির সময় সামান্য আদার গুণে উপশম পাওয়া যায়। স্বাদেগন্ধে ও গুণের দিক থেকে আদা খানিকটা সমসাময়িক হলুদ ও এলাচের। আদা কেটে, অথবা গুড়ো করে রস বার করে খাওয়া যায়। তবে স্বাদ বাড়ানো ছাড়া অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে আদার। গরম চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আদাতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি রক্ত সঞ্চালন-প্রক্রিয়া উন্নত করে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। পাশাপাশি আদার রস ধমনিতে চর্বি জমতে বাধা দেয়। ফলে প্রতিদিন আদা-চা পান করলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।

গ্রিন টি : গ্রিন টি বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ওয়েটলস ড্রিঙ্কের কথা বলতে গেলে গ্রিন টির নামটি এর শীর্ষে আসে। ওজন হ্রাস থেকে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ও এটি হজমে উন্নতি করে। গ্রিন টি পান করলে কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এর উপকারের তালিকা খুবই দীর্ঘ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে দিনে এক কাপ থেকে দু কাপ গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যকর। তবে কিছু লোক গ্রিন টি এত পছন্দ করে যে তারা দিন শুরু করেন এ গ্রিন টি দিয়ে। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, নিয়মিত খেতে পারলে ত্বক, চুল সবই ভালো থাকে।

ক্যামোমাইল টি : ভেষজ চা এর মধ্যে অন্যতম হলো এ ক্যামোমাইল টি। তবে একরকম ফুল থেকে তৈরি হয় এ চা। যার ফলে এ চায়ের মধ্যে ক্ষতিকর ক্যাফেন থাকে না। আর তাই এ চা খেলে স্নায়ুর উত্তেজনা কম থাকে। ঘুম ভালো হয়। মূলত দু’রকমের ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয়- রোমান ও জার্মান। প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও উল্লেখ রয়েছে এ চায়ের। তবে যারা গর্ভবতী, তাদের এ চা এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যামোমাইল যেহেতু ফুল থেকে তৈরি তাই এ চা খুব ভালো করে সংরক্ষণ করতে হবে। কাচের জারে রাখতে হবে এ চা। সেই সঙ্গে দেখা প্রয়োজন যেন সূর্যালোক না লাগে। ঠান্ডা পরিবেশে রাখতে হবে এ চা।

পুদিনা চা : পুদিনা পাতা আমাদের সবার কাছেই পরিচিত। এ পাতার মূল, পাতা, কাণ্ডসহ সমগ্র গাছই ঔষুধিগুণে পরিপূর্ণ। এর পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কাবাব, চাটনি, মশলায় ব্যবহার করা হয় পুদিনা পাতা। বিভিন্ন দেশে পুদিনার বেশি ব্যবহার হচ্ছে তেল তৈরিতে। পুদিনার মধ্যে থাকা মেন্থল কুবই উপকারী। তাই লিকার চায়ের মধ্যে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রেখে খান। ভালো উপকার পাবেন। তার আগে অবশ্য আদা দিয়ে ফুটিয়ে নিন।

জবা ফুলের চা : জবা ফুলের চা; কিন্তু একটি অসাধারণ পুষ্টিকর পানীয়। এটি উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা কমায়। একই সঙ্গে হজমের সমস্যাও দূর করে। লিভারের রোগ সারাতেও জবা ফুলের গুণ অনস্বীকার্য। এমনকী ক্যান্সারের প্রবণতা কমাতেও দারুণ উপকারী জবা ফুলের চা।

এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ঈ, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। উদ্বেগ ও উদ্দীপনা কমাতেও প্রভাব রয়েছে জবা ফুলের চায়ের। এর রং চুনির মতো লাল, খেতে খানিক টক। এ কারণে অনেকেই একে টক চাও বলে থাকে। এটির স্বাদ অনেকটা ক্র্যানবেরি জুসের মতো। এটি ঠান্ডা বা গরম- যেমন খুশি তেমনভাবেই খাওয়া যায়। একে কোনো রকম ক্যাফিন থাকে না। ফলে শরীরের পক্ষে এটি খুবই উপকারী হয়। আপনি একাধিক বার খেলেও এর কোনো খারাপ প্রভাব শরীরে পড়ে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত