ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কফি নিয়ে কিছু কথা

কফি নিয়ে কিছু কথা

যত দিন যাচ্ছে, তত জটিল হচ্ছে মানুষের জীবন। বাড়ছে কাজের চাপ। নানা কারণে উদ্বেগে ভুগছে মানুষ। সেসব দূরে রাখতে নিয়মিত শরণাপন্ন হতে হচ্ছে ক্যাফেইন-নির্ভর পানীয়র ওপর। চায়ের চল বেশি হলেও কফি পান করেন- এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অনেকে আবার বলেন, কফি চাপ ও উদ্বেগ দূরে রাখলেও বিপদ ডেকে আনে অন্য দিক দিয়ে। এর সঙ্গে নাকি সম্পর্ক আছে কোলেস্টেরলের। আসলেই কী তাই?

এখন অনেকেই কোলেস্টেরল-সংক্রান্ত নানা জটিলতায় ভুগছেন। দেখেশুনে মনে হতেই পারে, সব দায় কোলেস্টেরলের। আসলে কিন্তু এটা আপনার শরীরের জন্যই প্রয়োজন। ঘটনা হলো, এটা ভালো-মন্দ দুই ধরনেরই হয়। ভালো কোলেস্টেরলের কেতাবি নাম হাই-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল বা এইচডিএল। আর খারাপ কোলেস্টেরলের কেতাবি নাম লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল বা এলডিএল। এ এলডিএলের মাত্রা বেড়ে গেলেই বাধে গোল। তৈরি হয় নানা জটিলতা। এমনকি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হয়।

মজার ব্যাপার হলো, কফির সঙ্গে কোলেস্টেরলের সরাসরি সম্পর্ক নেই। তবে আপনার কফি পানের অভ্যাস শরীরে এর পরিমাণ নির্ধারণে রাখতে পারে ভূমিকা এবং সেটা ঘটতে পারে অনেকভাবেই। যেমন অতিরিক্ত কফি পানের মাধ্যমে আপনার শরীরের ওপর একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়। সেটা বাড়িয়ে দেয় কোলেস্টেরলের পরিমাণ। আবার কফি ইনসুলিনের পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়। তাতে ক্ষতি দুই দিক দিয়েই। কমে যায় ভালো কোলেস্টেরল। বেড়ে যায় খারাপটা।

শুধু তাই নয়, কফি আপনার শরীরের সেরাম কোলেস্টেরলের পরিমাণও বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে সেটা ঠিক কফির কৃতিত্ব বা দায় নয়। বরং তাতে কফি বানানোর প্রক্রিয়ারই দায় বেশি। ইনস্ট্যান্ট কফি বা ফিল্টার কফি এ বাবদে বেশ নিরাপদ। কিন্তু ফিল্টার না করা কফি বা ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি এ বাবদে ক্ষতিকর।

আসলে কোলেস্টেরলের এ বৃদ্ধির জন্য কফি নয়, মূলত দায়ী কফির তেল। ক্যাফেসল ও কাহওয়েল। এগুলো আপনার শরীরের বৌল অ্যাসিড ও নিউট্রাল স্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ফলে বেড়ে যায় কোলেস্টেরলের পরিমাণ। এক গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি দিনে পাঁচ কাপ করে চার সপ্তাহ ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি খায়, তার রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৬ থেকে ৮ গুণ বেড়ে যায়।

তাই খেয়াল রাখতে হবে, আপনি কোন ধরনের কফি পান করছেন এবং অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এর পরিমাণ। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন দিনে এক-দুই কাপের বেশি না খেতে। মনে রাখবেন, কোনো কিছুরই মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ ভালো নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত