চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম ছয় দিনে ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। তথ্য অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারি মাসের ছয় দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ৪০ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারি এ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৫.২৬ মিলিয়ন ডলার বা ৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এর পরেই রয়েছে আল-আরাফা ব্যাংকের মাধ্যমে ২৯.৩২, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ২৫.৭৯ মিলিয়ন ডলার। তবে এখন পর্যন্ত কোনো রেমিট্যান্স আসেনি বিডিবিএল, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি সিটি ব্যাংক (এনএ), হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স। অক্টোবরে আরও কিছুটা কমে যায়। তবে নভেম্বর থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের অন্যতম এই উৎস। নভেম্বরে এসেছিল ১৫৯ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে তা বেড়ে প্রায় ১৭০ কোটি ডলারে আসে। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে নতুন বছরের প্রথম মাসের শুরুতেও। ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এবার বেশ ঊর্ধ্বমুখী ভাব দেখা গেছে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের শুরুতেই। নতুন বছরের প্রথম মাসের প্রথম ছয় দিনে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার করে। রেমিট্যান্স আসার এ ধারা অব্যাগত থাকলে পুরো মাসে ২১০ কোটি বা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে রেমিট্যান্স। এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ (রিজার্ভ) আরও কমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়েনে (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। গত রোববার (৮ জানুয়ারি) দিনশেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগের দিন বুধবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ৩৬৩ কোটি ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর মানদণ্ড অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। এতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। আইএমএফের মানদণ্ড অনুসারে, দেশের মজুদকৃত রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ঋণ এবং রিজার্ভ থেকে দেশীয় প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যয় বাদ যাবে। তবে সরকার এখন আইএমএফ এবং নিজস্ব অর্থাৎ দুই ধরনের হিসাবই রাখছে।