সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
গাড়ির মালিকানা হস্তান্তর করেনি আইপিডিসি
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ঋণের সর্বশেষ কিস্তিসহ সুদাসলে মোট ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করেছে আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ঋণের সব টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনো তারা অনাপত্তি সনদ দিচ্ছে না। এর ফলে গাড়ির মালিকানাও বুঝে পাচ্ছে না আল হাবিব। গতকাল সোমবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আল হাবিব এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হাবিবুর রহমান। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাবিবুর রহমান বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান আল হাবিব এন্টারপ্রাইজ আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে ০৪/১২/২০১৬ তারিখের মঞ্জুরিতে ৬০ কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে গাড়ি কেনার জন্য ১০.৫০ শতাংশ সুদে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা গ্রহণ করে। ঋণের টাকা ছাড় হওয়ার আগেই ঋণ পরিশোধের নিমিত্তে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৩ টাকা করে ৬০টি চেক নিয়ে নেয় তারা। এই ঋণের টাকায় নিটল টাটা থেকে ১০টি গাড়ি কেনা হয়। যা আইপিডিসি সরাসরি নিটল টাটাকে পরিশোধ করে। পরে আমরা সর্বশেষ কিস্তিসহ গত ৩০ জুন সুদসহ সর্বমোট ৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮০ টাকা আইপিডিসিকে পরিশোধ করি।
তিনি বলেন, একইভাবে ০৪/০৭/২০১৭ তারিখের মঞ্জুরিতে আরও ৫ কোটি টাকা ঋণ নেয় আমার প্রতিষ্ঠান। আমরা গত ৩০ অক্টোবর এই ঋণেরও সর্বশেষ কিস্তিসহ সুদাসলে সর্বমোট ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা আইপিডিসিকে পরিশোধ করি। কিন্তু দুটি ঋণের সব টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনো পর্যন্ত আমাদের অনাপত্তি সনদ দিচ্ছে না আইপিডিসি। ফলে আমরা গাড়ির মালিকানাও বুঝে পাচ্ছি না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্টো গাড়ির মালিকানা না দেয়ার কারণ জানতে চেয়ে আইপিডিসির দ্বারস্থ হলে মৌখিকভাবে প্রথম ঋণের জন্য আরও ৩২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪ টাকা এবং দ্বিতীয় ঋণের জন্য আরও ৭২ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৪ টাকা দাবি করে আইপিডিসি। সুদে আসলে সব টাকা যথাসময়ে পরিশোধের পরও অতিরিক্ত এই টাকা কিসের জন্য তা লিজিং কোম্পানিটির কাছে বারবার জানতে চাইলেও তারা আমাদের সদুত্তর দিতে পারছে না। এই টাকা কোন খাতে বকেয়া রয়েছে তা লিখিতভাবে জানতে সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর আমরা আইপিডিসিকে চিঠি দিলে তার জবাবে ২৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম ঋণের ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯১৬ টাকা এবং দ্বিতীয় ঋণের ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৪ টাকা পাওনা রয়েছে। তবে এতে আবার অগ্রিম হিসেবে প্রথম ঋণের ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৩ টাকা এবং দ্বিতীয় ঋণের ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৫ টাকা সমন্বয় করা হয়নি বলে দাবি করে আইপিডিসি, যা উল্লেখিত পাওনা টাকা থেকে বাদ যাবে বলে জানায় তারা। তবে আইপিডিসির পক্ষে পাওনা দাবি করা এই চিঠিতে কে স্বাক্ষর করেছেন তার নাম এবং পদবিও উল্লেখ করা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, অতিরিক্ত দাবি করা এই টাকা পরিশোধ করা না হলে গাড়ি না দিয়ে উল্টো সিআইবি লিস্টে ক্লাসিফাইড করে দেয়ারও হুমকি দেয় তারা। যা আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করার শামিল। তবে কোন আইনে এবং কখন এই সুদের হার বাড়ানো হয়েছে সে ব্যাপারে উক্ত প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ বা আলোচনাও করেনি এবং আমাদের সম্মতিও নেয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগের পর গত ২ নভেম্বর বিষয়টি গ্রাহক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চিঠি দেয়া হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না আইপিডিসি।