বিশ্বব্যাংকের আর্থিক খাত সহায়তা প্রকল্পের (এফএসএসপি) আওতায় বেসরকারি খাতের উৎপাদনমুখী শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুদহারে ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ নির্দেশনা মতে, প্রকল্পের আওতায় লং টার্ম ফাইনান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) ঋণ গ্রহীতাদের সুদের ক্ষেত্রে লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেট (লাইবর) কার্যকর থাকছে না। মূলত লাইবর রেটের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের উদ্যোক্তাদের বিশাল ছাড় দিতে সুদ আরোপে লাইবরের সঙ্গে যুক্ত সুদহারের সমন্বয় তুলে নিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে উদ্যোক্তাদের ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদি ঋণের বিপরীতে ৩ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদ দিতে হবে। আগের নিয়মে সুদহার ছিল লাইবর রেটের সঙ্গে আরও বাড়তি ২ থেকে ৩ শতাংশ। সেই হিসাবে চলমান ঋণের সুদ (গতকালের লাইবর রেট হিসাবে ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বাড়তি সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ) মিলে দাঁড়ায় প্রায় ৮ শতাংশ। সব মিলে উদ্যোক্তাদের এখন আগের চেয়ে অর্ধেকেরও কম সুদ দিতে হবে যা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করতে বলা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন এ নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিং মান যত ভালো তারা তত কম সুদে ঋণ দিতে পারে। আর শুধুমাত্র ১, ২ ও ৩ রেটিং মান পাওয়া ব্যাংকগুলো এফএসএসপি থেকে ঋণের জন্য অর্থ নিতে পারে। ক্যামেলস রেটিংয়ে মান-১ পাওয়া ব্যাংকগুলো এখন পাঁচ বছর মেয়াদি ঋণ বিতরণ করবে ৩ শতাংশ সুদে। যা আগে ছিল লাইবর রেট (৫ দশমিক ১৪ শতাংশ) ও যোগ ২ শতাংশ। সাত বছর মেয়াদি ঋণ দেবে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদে, আগে ছিল লাইবর যোগ ২ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদ। ১০ বছরের অধিক মেয়াদি ঋণের সুদ হবে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ যা আগে ছিল লাইবর যোগ ২ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে।
২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় গঠিত ২৯ কোটি ২৫ লাখ ডলারের তহবিলের কার্যক্রম শুরু হয়। এখানে বিশ্বব্যাংক জোগান দিয়েছে ২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। সেখান থেকে ব্যাংকগুলো অর্থ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রায় সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে ঋণ দিতে পারে।